প্রতিনিধি ২৫ আগস্ট ২০২২ , ৮:৫৯:৫৪ প্রিন্ট সংস্করণ
জুয়েল রানা বিশেষ প্রতিনিধি ফুলপুরঃ
ময়মনসিংহের ফুলপুরের গোয়ালঘরে শিকলে বন্দি সহোদর সেই মানসিক ভারসাম্যহীন প্রতিবন্ধীরা পেলো সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে সরকারি ভাতার কার্ড।
উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোঃ শিহাব উদ্দিন খান ২৫শে আগস্ট বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব শীতেষ চন্দ্র সরকার ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আতাউল করিম রাসেল মহোদয়কে ২নং রামভদ্রপুর ইউনিয়নের গোয়াডাঙ্গা মধ্য পাড়ার গ্রামের (বেপারি বাড়ি) দিনমজুর মোঃ আজিজুল হক(৬৭) বাড়িতে গিয়ে উনার ছোট ছেলে আনারুল ইসলাম(৩১) এর হাতে এ ভাতার কার্ড তুলে দেন ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা যুবলীগ নেতা আশরাফুল, তাক্ওয়া অসহায় সেবা সংস্থার সাধারণ সম্পাদক রুবেল মাসুদ সহ আরো অনেকেই।
মানসিক প্রতিবন্ধীদের মা জয়গুন নেছা(৬১) সহ পরিবারে লোকজন বলেন, আপনারা ছিলেন বলেই আমার ছেলেরা সরকারি ভাতার কার্ড পেয়েছেন । আল্লাহ্ কাছে নামাজ পরে দোয়া করবো যারা আমাদের পাশে থেকে সহযোগিতা করেছে সবাইকে যেন সুস্থ ও ভালো রাখেন সব সময়।
উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোঃ শিহাব উদ্দিন খান বলেন, আপনারা আছেন বলেই অসহায় বঞ্চিত মানুষগুলো সরকারি ভাতার অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। কেননা আমরা তো সব খবর রাখতে পারিনা যে কার কার্ড হয়নি। তিনি আরো বলেন ৩-৪দিন আগে উনাদের বাড়িতে গিয়ে সব কিছু দেখি ও করুন কাহিনীটি শুনে অনেক কষ্ট লাগে। পরে জানতে পারি তাক্ওয়া অসহায় সেবা সংস্থার মাধ্যমে উনাদের প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডের জন্য আবেদন করেন গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ইং তারিখ আশরাফুল। পরে আলমগীরের কার্ড টি ইসু করি। বড় আনারুলের ভোটার আইডি কার্ডটির ফটোকপি ক্লিয়ার না থাকাই ইস্যু করতে পারিনি। তবে এক সপ্তাহের মধ্যে মধ্যে কার্ডটি তুলে দেবার চেষ্টা করব।
উপজেলা যুবলীগ নেতা আশরাফুল জানান, একই ঘরে দুটি সন্তান মানসিক প্রতিবন্ধী। গোয়াল ঘরের মধ্যে ছোট ছেলেকে শিকলে বন্দি করে ও বড় ছেলেকে ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে সহপরিবার থাকলেও কোনদিন কাটে চিড়ামুড়ি খেয়ে। জনপ্রতিনিধির কাছে ঘুরতে ঘুরতে অবশেষে দিশেহারা হয়ে পরেন। টাকা না দিতে পারায় হচ্ছে না কোনো ভাতার কার্ড। এসব বিষয়ে তাক্ওয়া অসহায় সেবা সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক তপু রায়হান রাব্বি ভাইকে জানালে তিনি এসে এ বছরের জানুয়ারীর শেষদিকে এসে জাতীয় দৈনিক আজকের সংবাদ পত্রিকা সহ বিভিন্ন অনলাইন নিউজ করেন এবং আমাকে বলেন একটু ওনাদের পাশে থেকে সহযোগিতা করার জন্য পড়ে আমি ওনার কথামতো সকল কাগজপত্র উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে জমা দেই।
এ বিষয়ে তাক্ওয়া অসহায় সেবা সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক তপু রায়হান রাব্বি জানান, ওইখানের স্থানীয় আশরাফুল ভাই আমাকে ও আমাদের সংস্থার সাধারণ সম্পাদক রুবেল মাসুদ কে বিষয়টি জানালে আমরা পরদিনই উনাদের দেখতে চাই । কি বলবো উনাদের আর্থিক অবস্থার কথা, কষ্ট ছাড়া কিছুই নেই ওই পরিবারটিতে। ছেলেদের চিকিৎসার জন্য শেষ সম্বল পায়ে প্যাডেল চালিত ভ্যান গাড়িটিও বিক্রি করে দেন। পরে আশরাফুল ভাইকে বলি আপনি পাশে সাথে একটু যোগাযোগ করবেন ভাই। আমি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা.প্রাণেশ চন্দ্র পন্ডিত স্যারের সাথে কথা বলে রাখব যেন উনাদের যাচাই-বাছাই করে প্রতিবন্ধী চিহ্নিত করেন। পরে আপনি সকল কাগজগুলো সমাজসেবা অফিসারের কার্যালয়ে জমা দেবেন। তাক্ওয়া অসহায় সেবা সংস্থা পক্ষ থেকে সকলের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই যারা ঐ পরিবারের পাশে থেকে উনাদের ভাতা পাবার হার সহযোগিতা করেছেন। সেই সাথে ধন্যবাদ জানাই ওইখানের স্থানীয় গ্রাম পুলিশের সদস্য কারিম ভাইকে একটি ১০ টাকা কেজি চাউল(ভিজিএফ) এর কার্ড করে দেন।