প্রতিনিধি ২ জুলাই ২০২২ , ৬:২৫:০৬ প্রিন্ট সংস্করণ
মোঃ শরিফুল ইসলাম: ক্ষুদ্র লৌহজাত শিল্পের উপর নির্ভরশীল পাবনার পেশাদার কামাররা। বছর ঘুরে পবিত্র ঈদুল আযহা এলেই লোহার নানা জিনিস তৈরির টুং টাং শব্দে মুখর হয়ে ওঠে ব্যস্ত কামারপাড়া। ঈদকে সামনে রেখে কুরবানির পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম তৈরিতে শেষ মুহূর্তে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন জেলার কামাররা।
সরেজমিন দেখা যায়, কামারের দোকানগুলোতে কেউ আসছেন পুরোনো ছুরি, কাঁচিতে শান দিতে। কেউ আসছেন নতুন কাজের অর্ডার নিয়ে। ঈদ সামনে রেখে পশু কোরবানির বড় ছুরি, ছোট ছুরি, চাপাতি, বটির চাহিদা বাড়ছে।
পাবনা সুজানগরে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কোরবানির সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামাররা। তাদের দোকানে টুং টাং শব্দ করে তৈরি হচ্ছে একেকটি ধারালো উপকরণ। ছুরিতে ধার দিচ্ছিলেন শ্রী অনিল সরকার। এই দোকানি কাজের ফাঁকেই বলেন, ৫০ বছর ধরে এ পেশার সঙ্গে রয়েছেন তিনি। সারা বছর তেমন কাজের চাপ না থাকলেও বছরে কোরবানি ঈদে কাজের ব্যস্ততা দু’গুণ বেড়ে যায়। তবে বর্তমানে লোহা ও কয়লার দাম বেশি হওয়ায় লাভ খুব কম হচ্ছে বলে তিনি জানান।
ঈদ উপলক্ষে চাপাতি, ছুরি ও বটির চাহিদা কিছুটা তৈরি হচ্ছে জানিয়ে অনিল কামারের পাশের দোকানের কামার শ্রী উত্তম সরকার বলেন, কেজি হিসেবে এখানে এসব জিনিস বিক্রি হয়। বটি কেজি হিসেবে মানভেদে ৪০০-২২০০ টাকা, দা ৫০০-১৫০০ টাকায়, ছোট ছুরি ১৫০-৫০০ টাকায়, বড় ছুরি ৮০০-২০০০ টাকায় এবং চাপাতি ৩৫০-১৫০০ টাকায় বিক্রি করছি।
এই কামারি আরও বলেন, এখনও কাস্টমারের চাপ বাড়েনি। তবে আগামী সপ্তাহে এই চাপ বাড়বে। কারণ কোরবানির ঈদের সময় ঘনিয়ে আসবে, হাট জমজমাট হবে, পশুর বেচাকেনা বাড়বে।
সাগরকান্দি এলাকার কামারি শ্রী প্রভাত সরকার বলেন, প্রায় ২০ কছর ধরে এ কাজ করছি। সারা বছর তেমন এসব লোহার সরঞ্জাম তৈরীর কাজ থাকে না। বছরে কোরবানির ঈদ আসলে একটু চাপ বাড়ে। আগের মতো এ কাজে তেমন আয় হয় না। বাবা, দাদুরা এ কাজ শিখিয়ে গেছেন। তাদের পেশা ধরে রেখেছি। এখন অন্য কোনো পেশায় যেতে পারছি না ।
শাওন মন্ডল নামে এক ক্রেতা বলেন, কোরবানির গরুর মাংস কাটার জন্য নতুন চাপাতি কিনতে এসেছি। তৈরি করা তেমন ভালো চাপাতি পাচ্ছি না। তাই এক কেজি ওজনের ইস্পাত কিনে নতুন চাপাতি বানাতে দিলাম। এবছর চাপাতির দাম অনেক বেশি মনে হচ্ছে।