• সারাদেশ

    ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় সমাপনী অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে ২৭ তম আসরের পর্দা নামলো

      প্রতিনিধি ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ২:৩১:৫২ প্রিন্ট সংস্করণ

     

    এনামুল হক স্টাফ রিপোর্টার:

     

    পূর্বাচলস্থায়ী মেলা কমপ্লেক্স বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ – চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার (বিবিসিএফইসি) –এ চলমান ২৭ তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা ( ডিআইটিএফ) ৩১ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখ সমাপ্ত হয়েছে। মেলায় সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী, নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার ১ আসনের এমপি জনাব গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক।

     

    এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মাননীয় বাণিজ্য মন্ত্রী জনাব টিপু মুন্সি এমপি, ও এফবিসিসিআই – এর সিনিয়র সহ-সভাপতি জনাব মোস্তফা আহমেদ বাবু। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যৈষ্ঠ অতিরিক্ত সচিব জনাব মোঃ হাফিজুর রহমান।

     

    অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্য রাখেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস – চেয়ারম্যান জনাব এ. এইচ. এম আহসান। এবারের বাণিজ্য মেলায় বিভিন্ন ক্যাটাগরির মোট ৩৩১ টি প্যাভিলিয়ন, ইস্টল ও রেস্টুরেন্ট রয়েছে যা গত বছরের তুলনায় ৪০% বেশি। মেলায় ভারত, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, কুরিয়া পাকিস্তান, থাইল্যান্ড ও নেপালের মোট ১৭টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

     

    বিভিন্ন ধরনের বস্ত্র মেশিনারীজ, কার্পেট, কসমেটিক এন্ড বিউটি এইডস, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহ সামগ্রী, চামড়া, আর্টিফিশিয়াল চামড়া ও জুতাসহ, চামড়া জাত পণ্য, স্যানেটারীওয়্যার, খেলনা, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক, মেলামাইন পলিমার, হারবাল ও টয়লেট্রিজ, ইমিটেশন জুয়েলারী, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ফাস্টফুড, হস্তশিল্প জাত পণ্য, হোম ডেকর, ফার্নিচার ইত্যাদি পণ্য মেলায় পদর্শন করা হয়েছে।

     

    এবারও মেলায় নির্মাণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন। এ প্যাভিলিয়নের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও আদর্শ, স্বাধীনতার সংগ্রাম, শিল্প সমৃদ্ধ – সোনার বাংলা বিনির্মাণে তার অবদান ও ভাবনা ইত্যাদিকে সকলের নিকট বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের নিকট তুলে ধরার প্রয়াস নেয়া হয়েছে। প্যাভিলিয়নে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মভিত্তিক বিভিন্ন আলোকচিত্র প্রদর্শন ছাড়াও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কিত কুত্ত কাদি এবং তার জীবন ও কর্মভিত্তিক ডকুমেন্টারি প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

     

    মেলায় সাধারণ দর্শনার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে মেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত পর্যাপ্ত সংখ্যক বিআরটিসি ডেডিকেটেড শাটল নিয়মিত মেলার আনা নেওয়ার কাজে নিয়োজিত করা হয়। মেলায় দ্বিতল কার পার্কিং এ ৫০০ শতাধিক গাড়ি পার্কিং সুবিধা ছাড়াও একজিবিশন হল এর বাইরে ৬ একর জমিতে সুফল উপভোগ করেছে মেলার দর্শনার্থীগণ।

     

    মেলায় দর্শনার্থীদের সকল প্রকার তথ্য প্রদানের জন্য মেলায় রয়েছে একটি তথ্য কেন্দ্র। সকল শ্রেণীর দর্শনার্থী ক্রেতা বিক্রেতার সুবিধার্থে মেলায় নিশ্চিত করা হয়েছে পর্যাপ্ত ব্যাংকিং সুবিধা, বিনামূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা সুবিধা, রক্তদান সেবা, নামাজ আদায়ের সুবিধা, দর্শনার্থীদের বিশ্রামের জন্য আরামদায়ক ও শোভন চেয়ার/বেঞ্চ ইত্যাদি। শিশুদের চিত্র বিনোদনের জন্য স্থাপন করা হয়েছে মা ও শিশু কেন্দ্র এবং শিশু পার্ক।

     

    মেলায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি অধিকতর গুরুত্বের সাথে বিবেচনা নিয়ে এক্সিবিশন হলের বাইরেও নির্মাণ করা হয়েছে পর্যাপ্ত সংখ্যক টয়লেট এবং নিয়োজিত রয়েছে পর্যাপ্ত সংখ্যক পরিচ্ছন্ন কর্মী। এছাড়া মেলায় সার্বিক নিরাপত্তা মেলা প্রাঙ্গণ ও আশেপাশের সিসিটিভি সার্ভেলেন্স সিস্টেমের আওতায়।

     

    মেলায় নিয়োজিত পুলিশ ও ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্যদের ডি জি এফ আই ও এন এস আই সহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মেলায় সার্বিক নিরাপত্তা বিধান করেছে। যেকোনো ধরনের অগ্নি দুর্ঘটনার রোধে মোতায়েন রয়েছে একটি শক্তিশালী ফায়ার ব্রিগেড ও এম্বুলেন্স।

     

    মেলায় খাদ্য দ্রব্যের মান নিয়ন্ত্রণ ও ভোক্তা হয়রানি বন্ধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নেতৃত্বে প্রত্যহ পরিচালনা করা হয় ভেজাল বিরোধী অভিযান।

    মেলায় ২৩ টি রেস্টুরেন্ট ছাড়াও একজিবিশন সেন্টারের ভিতরে ৫০০ আসন বিশিষ্ট ক্যাফেটেরিয়ার দর্শনার্থীদের জন্য সুলভ মূল্যে চমৎকার পরিবেশে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।

     

    বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, এবারের বাণিজ্য মেলায় আনুমানিক প্রায় ৩০.৩৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (৩০০ কোটি টাকা) এর রপ্তানি আদেশ পাওয়া গেছে। মেলায় আনুমানিক প্রায় ১০০ কোটি টাকার পণ্য বিক্রয় হয়েছে।

     

    মেলায় সমাপনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন ক্যাটাগরির সেরা প্যাভিলিয়ন, স্টল ও প্রতিষ্ঠানকে ট্রফি প্রদানের মাধ্যমে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে। প্রথম পুরস্কার (গোল্ড কালার ট্রফি) প্রদান করা হয়েছে গাজী ইন্টারন্যাশনাল ও রংপুর মেটাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল লিমিটেড সহ বিভিন্ন ক্যাটাগরি ১০ টি প্যাভিলিয়ন ও স্টল কে ।

    ২য় পুরস্কার (সিলভার কালার ট্রফি) ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড ও নেসলে বাংলাদেশ লিমিটেড সহ বিভিন্ন ক্যাটাগরির ১৩ টি প্যাভিলিয়ন ও স্টল কে প্রদান করা হয়েছে।

     

    তৃতীয় পুরস্কার (ব্রোঞ্জ কালার ট্রফি) সে ভয় আইসক্রিম ফ্যাক্টরি লিমিটেড ও মিল্ক ভিটা সহ বিভিন্ন ক্যাটাগরির ১১টি প্যাভিলিয়ন ও স্টল কে প্রদান করা হয়েছে। বেস্ট ফার্নিচার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে নাভানা, আখতার, হাতিল ও নাদিয়া ৪টি প্রতিষ্ঠানকে ইনোভেটিভ পণ্য উৎপাদনকারী/ বিক্রেতা হিসেবে Raja tea ট্রফি প্রদান করা হয়েছে।

     

    দেশের পণ্যের প্রচার, প্রসার বিপণন, উৎপাদনের সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর যৌথ উদ্যোগে ১৯৯৫ সাল হতে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। যা দেশের রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখার পাশাপাশি সমষ্টিক অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলছে। এছাড়া, দর্শনার্থীদের বিনোদন, ক্রয়–বিক্রয় ও বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ–চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারের নান্দনিক স্থাপত্যশৈলীর আকর্ষণ ডিআইডিএফকে একটি জাতীয় অনুষ্ঠান হিসেবে প্রসিদ্ধ করছে

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ