প্রতিনিধি ২৩ মে ২০২৪ , ৬:০০:৫৩ প্রিন্ট সংস্করণ
মোঃ ফরহাদ হোসেন, নওগাঁ প্রতিনিধিঃ
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার বড় কাবলা গ্রামের আব্দুস সাত্তার মিয়া। বয়স ৭০ এর কাছাকাছি। বয়সের ভারে চলাফেরা করতে পারে না ঠিক মতো। তবুও জীবন জীবিকার তাগিদে লড়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। ঘরে রয়েছে একমাত্র স্ত্রী। তিনিও অন্ধ। রাতে ঘুমানোর মতো জায়গাও নেই। তার দুঃখ-কষ্ট দেখে বদলগাছী’র বাবলু নামে একজন ব্যক্তি তার মেয়ের আবহাওয়া অফিস সংলগ্ন ঘরবাড়ি দেখাশুনার দায়িত্ব দেয়। আশ্রয় হিসাবে সেখানেই থাকে ঐ ভুক্তভোগী স্বামী-স্ত্রী। এর আগে করোনার সময় মাটি কাটা কাজ করার সময় চোখে বালি পরে সমস্যা দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শে অপারেশন করলে একটি চোখ অন্ধ হয়ে যায়।
ভুক্তভোগী আব্দুস সাত্তার মিয়া’র কাছে জানা যায়, তিনি প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে আর্থিক সাহায্য চেয়ে আবেদন করেন। যাচাই-বাছাই শেষে তার আবেদন গ্রহণ অন্তে গত ২২শে অক্টোবর ২০২৩ ইং স্মারক নং ০৩.০০৭.০৩৭.০০.০০.৪১৫.২০২৩(অংশ-৪১৪) /১৬৭৮ পত্রের মাধ্যমে আব্দুস সাত্তার মিয়াকে তার অনুদানের চেক বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় অথবা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে রেভিনিউ স্ট্যাম্প যুক্ত চেক গ্রহন করতে বলা হয়।
এরপর পত্র নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে অত্র চেকটি সংগ্রহ করতে গেলে, অনেক খোঁজা-খুঁজির পর ভুক্তভোগীকে জানানো হয়, এখানে আপনার চেক নেই। আপনি জেলা প্রশাসক অফিসে খোঁজ নিন।
এরপর একইভাবে জেলা প্রশাসকের অফিসে গেলে অনেক খোঁজার পর জানানো হয়, আপনার চেকটি কে বা কাহারা নিয়ে গেছে। এখন প্রশ্ন হলো? আব্দুস সাত্তার মিয়ার নামে ইস্যুকৃত চেকটি কে সংগ্রহ করলো। এমন প্রশ্নের উত্তর বারবার এড়িয়ে গেছেন ঐ অফিসের কর্মকর্তারা। সবশেষে ভুক্তভোগীকে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে খোঁজ নিন।
এবার ভুক্তভোগীর গন্তব্য ঢাকায় সাবেক এমপি সেলিম তরফদারের বাসভবনে। সেখানে গিয়ে উক্ত স্মারকের পত্রটি দেখানো হলে এমপি সেলিম উদ্দীন তরফদার সচিবালয়ের ৪ নং গেটে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। অনেক ঘুরাঘুরি আর অনুরোধ করে সচিবালয়ের ৪ নং অফিসে গিয়ে জানতে পারে ঐ স্মারকের চেকটি নওগাঁ জেলা প্রশাসকের অফিসে পাঠানো হয়েছে। ভুক্তভোগী আবার জেলা প্রশাসকের অফিসে খোঁজ নিয়ে তার চেকের কোনও সন্ধান পায়নি। তাহলে চেকটি গেল কোথায়? ভুক্তভোগীর এমন প্রশ্নের উত্তর দেবে কে?
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের অফিস সহকারী একরামুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঐ অন্ধ ব্যক্তি আমার অফিসে বারবার এসেছে। আমি বারবার খুঁজে দেখেছি ঐ ব্যক্তির নামে কোনও চেক বা চিঠি কোনটিই এখানে আসে নি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অঃ দাঃ) মো. কামরুল হাসান সোহাগ বলেন, এমন হওয়ার তো কথা না। হয়তো কোনও কারনে আসে নি। ঐ চেক অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারবে না। তারপরও আমরা খোঁজ নিবো।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক গোলাম মওলা বলেন, এমনটা হওয়ার কথা না। আপনার কাছে কাগজ পত্র থাকলে হোয়াটসঅ্যাপে দিন। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।