প্রতিনিধি ৩০ অক্টোবর ২০২২ , ১০:২৬:৫৫ প্রিন্ট সংস্করণ
বিএনপির সংসদ সদস্যরা পদত্যাগের জন্য প্রস্তুত আছেন- দলটির মহাসচিবের এমন বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর কাদের পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেছেন, তাঁদের সাতজন সংসদ সদস্য পদত্যাগ করলে কি সংসদ অচল হয়ে যাবে?’ তিনি আরও জানান, এই বিষয়টিকে তারা কেমন কোন গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন না।
রোববার, রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান। আগামী ২৪ ডিসেম্বর দলটির ২২তম জাতীয় সম্মেলনের প্রস্তুতির বিষয়ে ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
দলীয় সিদ্ধান্ত জানালে সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করবে, বিএনপির এমন ঘোষণা প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, হুমকির কী আছে? তাতে কি সংসদ অচল হয়ে যাবে? তাঁরা কয়জন? সাতজন। পদত্যাগের ব্যাপারটা তাঁদের দলের সিদ্ধান্তের বিষয়। এটা আমাদের বিষয় নয়।
আওয়ামী লীগ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে বিশ্বাসী নয় বলে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে দলের বিভিন্ন প্রস্তুতি সভা ও ধারাবাহিক কর্মসূচি হচ্ছে। বিএনপির সঙ্গে এটা কোনো পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নয়। দলের এসব কর্মসূচি পূর্বনির্ধারিত।
বর্তমান সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না, এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখনো নির্বাচনের এক বছর বাকি। অনেক সময়। এর মধ্যে কত কিছু ঘটে যাবে। নাটকের পর নাটক। বিএনপি তো রঙ্গে রঙ্গের নাটক। গতবারও আসবে না, আসবে না। পানি ঘোলা করে শেষ পর্যন্ত ঠিকই এসেছে। পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে গড়ায়, সেটা দেখুন।
তিনি আরও বলেন, পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, মধুমতির জল গড়িয়ে যাবে অনেক দূর। জল যাবে মিশে বঙ্গোপসাগরে। কাজেই অপেক্ষা করুন। সময়ে অনেক কিছু বদলায়।
বিরোধীদের দমনে জঙ্গিবাদ ও আগুন সন্ত্রাসের ভোঁতা অস্ত্র ব্যবহার করছে, বিএনপির এমন দাবি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িক শক্তি ছাড়া বিএনপির সভা-সমাবেশ অচল। জঙ্গিবাদ তাদের হাতেই সৃষ্টি। সাম্প্রদায়িক শক্তির প্রধান পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে দলটি।
তিনি বলেন, আগুন–সন্ত্রাস করতে আসুন। মাঠে আসুন। জনগণ প্রস্তুত। তাদের নিয়ে প্রতিরোধ করা হবে। আগুন–সন্ত্রাস করতে দেওয়া হবে না। আন্দোলন করুক আমাদের আপত্তি নাই।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বিএনপিকে আন্দোলন করতে দেওয়ার জন্য বলেছেন বলে উল্লেখ করে কাদের বলেন, কোনো প্রকার বাধাবিঘ্ন আমরা সৃষ্টি করি নাই। পরিবহন ধর্মঘট… পরিবহনের লোকেরা তাদের ভয় পায়। আমরা কী করব? সেখানে আওয়ামী লীগও আছে, বিএনপিও আছে। জাতীয় পার্টিও আছে, সবাই আছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, শ্রমিক ফেডারেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট বিএনপির শিমুল বিশ্বাস। তাই বিএনপিকে পরিবহন ধর্মঘট নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসা করার পরামর্শ দেন তিনি। তিনি বলেন, ‘বিএনপি হই হই, রই রই করলেই শ্রমিকেরা ভয় পায়। আবার আগুন–সন্ত্রাস এসে পড়ে!
করোনার কারণে দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগ সভাপতি বাইরে কোনো কর্মসূচি করতে পারেননি বলে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি (শেখ হাসিনা) বেশ কিছুদিন ধরে বলছিলেন বাইরে জনসভা করবেন। প্রথমে দুই–তিনটি জেলা নির্দিষ্ট করে বলেছেন যে এগুলোতে সমাবেশ করবেন। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য জেলায়ও করবেন।
গণভবনে প্রতি সপ্তাহে দুটি করে জেলার নেতাদের সঙ্গে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা বৈঠক করবেন বলে জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বর্ধিত সভায় যারা উপস্থিত থাকেন, এই পর্যায়ে গণভবনে দুটি জেলার সঙ্গে সপ্তাহে একবার করে বসবেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের আগেই দলের মেয়াদ উত্তীর্ণ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ, ডক্টর আবদুর রাজ্জাক, মো. ফারুক খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ও অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ডক্টর আবদুস সোবহান গোলাপ ও দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াসহ অন্য কেন্দ্রীয় নেতারা।