• সারাদেশ

    কুমিল্লায় এক  বছরে ৮২ খুন 

      প্রতিনিধি ২৩ ডিসেম্বর ২০২২ , ৭:২৮:২৬ প্রিন্ট সংস্করণ

     

     

    সোহরাওয়ার্দী খান,কুমিল্লা

     

    কুমিল্লা জেলায় গত এক বছরে খুন হয়েছে ৮২ টি। যার বেশির ভাগই পারাবারিক কলহের জেরে এবং পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে হত্যাকাণ্ড। এরমধ্যে মুরগি চুরি, ঘাস কাটা নিয়ে তর্ক, পাতা কুড়ানো, গাছ কাটা, মাইক্রোবাসের ভাড়া নিয়ে তুচ্ছ ঘটনার কারনেও খুনের ঘটনা রয়েছে। জেলা পুলিশের তথ্য মতে, নভেম্বর পর্যন্ত জেলায় খুনের সংখ্যা ৭৬ টি। ডিসেম্বর ২০ তারিখ পর্যন্ত খুন হয়েছে আরো ৬টি। নভেম্বর পর্যন্ত এগারো মাসে পারাবারিক কলহের জেরে খুন হয়েছে সবচেয়ে বেশি, ১৪টি। জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে খুন হয়েছে ১০টি। আধিপত্য সংক্রান্ত বিরোধের জেরে খুন হয়েছে ২টি। এছাড়া পুলিশ বলছে, অজ্ঞাত কারনে খুনের সংখ্যা ১২টি।

    এদিকে তুচ্ছ ঘটনায় হাতাহাতি, ধর্ষণের পর হত্যা, ভারত সীমান্তে হত্যা, পুরাতন মোবাইল ক্রয় বিক্রয়, মাদ্রাসা শিক্ষকের বেত্রাঘাতে ছাত্র খুন, কিশোর গ্যাং ও মাদকাসক্ত হয়ে বন্ধুকে হত্যা, পরকিয়া প্রেমের বিরোধে, মোটরসাইকেল ক্রয়-বিক্রয়, পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে এসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

    কুমিল্লা জেলা পুিলশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) খন্দকার আশফাকুজ্জামান জানান, এসব হত্যা মামলায় তদন্তনাধীন মামলার সংখ্যা ৫২টি। এছাড়া ২৪টি মামলার চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। এসব মামলায় মোট এজাহারনামীয় আসামি ২৭১ জন। গ্রেপ্তারকৃত আসামির সংখ্যা ১২২ জন। ১৬৪ ধারায় জবানবান্দি দিয়েছে ৩৭ জন।

    তিনি আরো জানান, খুনের মামলাগুলো সব সময়ই গুরুত্বের সাথে তদন্ত করে চার্জশীট দেয়া। প্রতিটি মামলায়ই আসামি দৃশ্যমান অগ্রগতি রয়েছে এবং অনেক মামলায়ই বিচারাধীন। আমরা চেষ্টা করছি সব মামলাগুলো গুরুত্ব অনুসারে আমলে নিয়ে তদন্ত করছি।

    কুমিল্লা আদালতের আইনজীবী এপিপি এএমএম মঈন জানান, আদালতে সাক্ষীদের অনিয়মিত উপস্থিতির প্রবণতা থাকায় হত্যামামলায় বিচারকার্য ধীরগতিতে হয়। এব্যাপারে মামলার স্ব স্ব তদন্তকর্মকর্তাকে সচেতন হতে হবে। এছাড়া সাক্ষীদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকতে হবে। শুনানিতে সাক্ষীদের নিয়মিত উপস্থিতি হত্য মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে সহায়ক।

    তিনি আরো জানান, পারিবারি কলহের জেরে হত্যাকাণ্ড বেশি হবার কারন সামাজিক মূল্যবোধ কমে যাওয়া। এছাড়া পারিবারের সদস্যদের মাঝে বাদবাদি পরিবারেই নিষ্পত্তি না করে তা বাড়তে দিলেই কোন কোন ঘটনা হত্যাকাণ্ডের মত নির্মম ফলাফলের দিকে যায়। তাই পারিবারিক সম্পর্কগুলো আমাদের ঘর থেকেই তৈরী করতে হবে এবং ধৈর্য্যের সাথে এসব বিষয় মোকাবেলা করতে হবে।

    সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কুমিল্লা জেলা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর মাসুম বলেন, ‘সম্পদ ও সম্পত্তির দাম দিন দিন অনিয়ম তান্ত্রিকভাবে বাড়ছে। যা ন্যায্য নয়। যার লাগাম সরকার বা সমাজ কেউই ধরে রাখতে পারছে না। যার কারণে মানুষের ভোগবিলাস আর লোভের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে নেই। তাই মানুষ শুধু চায় আর চায়। তাছাড়া আমাদের চাওয়া পাওয়ার মাত্রাও দিন দিন আকাশচুম্বী হচ্ছে। অন্যের জিনিসে আমাদের জোর খাটানো ঐতিহ্য হয়ে যাচ্ছে। তাই সম্পত্তির লোভে কেউ কাউকে খুন করতেও দ্বিধা বোধ করে না।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ