• আরো

    চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীকে দফায় দফায় হামলার অভিযোগ জবি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে 

      প্রতিনিধি ১ আগস্ট ২০২৩ , ৬:৫৫:৫৭ প্রিন্ট সংস্করণ

    রবিউল ইসলাম জবি প্রতিনিধি:

    জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসা সেবা নিতে গিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী।

     

    আহত ওই শিক্ষার্থী নাম সৌরভ দাশ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী।

     

    প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, (সোমবার) দুপুরে সেবা নিতে এসে চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে ওই শিক্ষার্থীর কথা কাটাকাটির হয়। এক পর্যায়ে ওই শিক্ষার্থীকে টেনেহিঁচড়ে বাহিরে নিয়ে মারধর করেন তারা।

     

    আহত শিক্ষার্থী সৌরভ দাশ আলোকিত বার্তা একাত্তরকে জানান, আমি মেডিকেল সেন্টারে প্রেসার মাপতে ছিলাম। তখন উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের সামিরা মাহমুদ মিথি নামের একজন শিক্ষার্থী আমাকে চেয়ার থেকে উঠতে বলেন। তিনি বলেন, ”আমি তাকে আমার দেখানোর পরে বসতে বলি চেয়ারে এতে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে আমার উপর চড়াও হন। কাটাকাটি এক পর্যায়ে ওই আপু আমাকে বাহিরে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর বেশ কয়েকজন বড় ভাই এসে আমাকে মারধর শুরু করেন। প্রথম দফায় হামলার পর আমি আমার ডিপার্টমেন্টে চলে যাই। সেখানে আমার ডিপার্টমেন্টের সিনিয়ররা আমাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে মেডিক্যাল সেন্টারে নিয়ে আসলে আবারও দ্বিতীয় দফায় মিনুন মাহফুজ, মিরাজ হোসাইন, সজিব বুদ্ধ, ইকবাল মাহমুদ রানা, সৈকতসহ ১৫-২০ জন আমাকে ঘিরে ধরে বেধরক মারধর করেন। আমি তাদের কাউকেই চিনতাম না। প্রত্যক্ষদর্শীসূত্রে তাদের পরিচয় জানতে পারি।”

     

    ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী আরও জানান, আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলাম। আজ প্রক্টর অফিসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। অসুস্থ থাকায় গতকাল অভিযোগ দিতে পারি নাই।

     

    হামলাকারীরা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসেনের অনুসারী।

     

    এ বিষয় জানতে চাইলে সামিরা মাহমুদ মিথি বলেন, আমি গত তিনদিন ধরে অসুস্থ। দুপুরে মেডিকেল সেন্টারে গিয়ে দেখি ওই ছেলে চেয়ারে বসে আছে। আমার শরীর অসুস্থ থাকায় তাকে চেয়ারটা ছেড়ে দিতে বলেছি কিন্তু সে জুনিয়র হয়েও আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে। আমি সিনিয়র পরিচয় দিলেও একপর্যায়ে আমাকে ধাক্কা মেরে চলে আসে এবং আমার সাথে থাকা রিসাত আরাকেও ধাক্কা মারলে আমরা চিৎকার শুরু করি। তখন রফিক ভবনের সামনে থাকা আমার কয়েকজন জুনিয়র তাকে আটকাতে গেলে হাতাহাতি হয়েছে।

     

    তিনি আরও বলেন, একজন মেয়ে হিসেবে আমি মনে করে সে আমাদের সাথে যৌন হয়রানি এবং অসদাচরণ করেছে আমরা এ বিষয়ে প্রক্টর অফিসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

     

    অভিযোগের বিষয়ে অস্বীকার করে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের অর্থনীতি বিভাগ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ রানা বলেন, “দু’জন সিনিয়র বড় আপু আমাদের ডাকলে সেখানে যায়। একপর্যায়ে ওই ছেলের সাথে আমাদের হাতাহাতি হয়েছে কিন্তু তাকে আমি মারি নাই। আর এমনকিছু হয়নি যে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে হবে।”

     

    এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসেন বলেন, আমাদের দু’জন ছাত্রীকে ইভটিজিং করায় তখন কথার কাটাকাটি হলে ঘটনার সূত্রপাত হয়। জগন্নাথে আমরা যারা ছাত্র প্রতিনিধি করছি ক্যাম্পাসে রেগ ডে, ছাত্রী বোনদের ইভটিজিং ও যৌন হয়রানি বিরুদ্ধে অনেক আন্দোলন করেছি। আমরা ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে বলতে চাই যারা আমাদের ছাত্রী বোনদের সাথে অশোভন আচরন করবে, এই নিয়ে আমাদের প্রশাসন যা ব্যবস্থা নিবে তার সাধুবাদ জানাবো এবং এরকম কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যেন আর না ঘটে তাই ক্যাম্পাসে সুস্থ্য পরিবেশ বজায় রাখার জন্য আমরা চেষ্টা করব।

     

    এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর কাজী নূর হোসাইন বলেন, আমরা একজন শিক্ষার্থীকে বিজ্ঞান অনুষদের দিকে আহত অবস্থায় দেখতে পেয়ে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে আসি। তাকে এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠিয়েছে সিটি স্ক্যান করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে। আমরা শুনেছি সিনিয়র-জুনিয়রের সাথে কথা কাটাকাটি হয় এবং একপর্যায়ে হাতাহাতি হয়েছে। তবে ছাত্রলীগের কেউ এখানে জড়িত আছে কিনা আমি বলতে পারিনা।

     

    বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোস্তফা কামাল জানান, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত কমিটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ আগামীকাল তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

    তদন্ত প্রতিবেদনের সময় বেঁধে দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ