প্রতিনিধি ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ৬:২৮:১৯ প্রিন্ট সংস্করণ
আব্দুল জব্বার :
গোড়া না কেটে ঢাল পাতা কাটা। চায়না দোয়ারি জালে সয়লাভ সারাদেশ বাদ যায়নি পাবনার অলিগলি সকল বিল হাওর বাওর। সকালে কাশিনাথপুর ডাব ডলা বাজারে গিয়ে দেখা মেলে এক অসহায় চিত্রের। ৫০-১০০ গ্রামের বোয়াল মাছ সহ নানান প্রজাতির দেশীয় মাছ বিক্রি হচ্ছে। যেখানে দেখা মেলেনি কারও বিরুপ প্রতিক্রিয়া কেও প্রতিবাদ করলেও বেশিরভাগ কথা বলতে ভয় প্রকাশ করে।
সুজানগর বিল পাড়ার বাসিন্দা আবুল হোসেন জানান, দুপুরে এই চায়না ছোট ছোট ডোবায় দুয়ারী নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। সারারাত নদীতে রাখার পর সকালে তীরে আনা হয়। এ সময় দেশীয় প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় সব মাছ, নদীতে থাকা জলজ প্রাণী এমনকি মাছের ডিমও জালে ধরা পড়ে। এই জাল দিয়ে মাছ ধরলে কয়েকদিন পর নদীতে আর মাছ পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়বে।
মহসিন কবির আলী মোল্লা নামে এক জেলে জানান, এর আগে তিনি কারেন্ট জাল ব্যবহার করলেও চায়না দুয়ারি এলে সেগুলো সরিয়ে ফেলেন। কারণ কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরার ফলে প্রশাসন উৎপন্ন হয়। এছাড়া চায়না দুয়ারিতে বর্তমান জালের চেয়ে বেশি মাছ পাওয়া যায়। ৫০ হাজার টাকা খরচ করে ৮টি চায়না দুয়ারী কিনেছি।
তিনি আরো বলেন, যারা পেশায় জেলে নন তারাও চায়না দুয়ারী দিয়ে মাছ ধরছেন। স্থানীয় বাজারে মান ও আকার অনুযায়ী এই জাল বিক্রি হয় ৩ থেকে ১০ হাজার টাকায়।
পাবনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান- আইনের প্রবিধান অনুযায়ী অনাদায়ে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।চায়না দুয়ারি ব্যবহারের কারণে দেশীয় প্রজাতির মাছ ধরা পড়ে। মাছ আজ বিলুপ্তির পথে। এছাড়াও সব ধরনের নিষিদ্ধ জালের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে।রাজবাড়ীর গোলন্দা উপজেলার পদ্মা নদীসহ বিভিন্ন স্থানে চায়না দুয়ারী নামে বিশেষ জাল দিয়ে নির্বিচারে মাছ শিকার করছে স্থানীয় জেলেরা। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এই জাল ব্যবহার করে খুব সহজে বেশি মাছ ধরতে পারলে আগামীতে স্থানীয় প্রজাতির মাছের অস্তিত্ব সংকটে পড়বে।
আসলে জেলে কিংবা ব্যবসায়ি এদেরকে আটকিয়ে বা জাল নিধন করে কতটা লাভবান হওয়া সম্ভব সে প্রশ্ন সাধারণের মনে। সচেতন মহল বলছে কারখানা ও বিদেশ থেকে আমদানি করা থাক দিলে ঠেকানো যাবে মাছ নিধন।
জানা গেছে, মাছের প্রজনন মৌসুমে কারেন্ট জাল নিষিদ্ধ করার পর ভয়ংকর চায়না দুয়ারী জালে দেশীয় সব প্রজাতির মাছ ধরা পড়ছে। প্রথমদিকে এই জাল শুধু পদ্মায় ব্যবহার করা হলেও এখন প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়ছে। বর্তমানে জেলেরা ঘন ঘন এই জাল ব্যবহার করতে শুরু করেছে।
দেশে প্রজাতির মাছ রক্ষায় সকলের একাগ্রতায় মাধ্যমে দেশীয় মাছ রক্ষার মাধ্যমে সম্পদ রক্ষায় সকলে এগিয়ে আসুক সেই প্রত্যাশা সাধারণ জনগণের।