• আরো

    কুড়িগ্রাম জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী কেয়া’র বিরুদ্ধে কুৎসা রটানোর অভিযোগ

      প্রতিনিধি ২ আগস্ট ২০২৩ , ১:৪১:৫২ প্রিন্ট সংস্করণ

     

    নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশব্যাপী বিএনপি’র অগ্নিসংযোগ ও জ্বালাও পোড়াও আন্দোলনের বিরুদ্ধে ডাকা আওয়ামী লীগের সারা বাংলাদেশের বিক্ষোভ মিছিলের অংশ হিসেবে কুড়িগ্রাম জেলাতেও কর্মসূচি পালিত হয়েছে। উক্ত কর্মসূচিতে জেলা আওয়ামী লীগের পাশাপাশি বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ এবং অন্যান্য সহযোগী সংগঠনগুলোও অংশগ্রহণ করে। উক্ত কর্মসূচি শেষে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জাফর আলীর জেলা পরিষদ ডাকবাংলোয় সাক্ষাত করতে যান জেলা আওয়ামী লীগ এবং মহিলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নারী সদস্য। এসময় কুড়িগ্রাম জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের পরিশ্রমী নেত্রী এবং স্লোগান কন্যা হিসেবে পরিচিত খাদিজা সুলতানা কেয়া দলীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ এবং তাদের আপ্যায়নের ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলী কে অবহিত করতে যান। এসময় কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের অন্য একজন বিতর্কিত সদস্য ফাল্গুনী তরফদার মহিলা নেত্রী খাদিজা সুলতানা কেয়া সভাপতির সঙ্গে কোন কথা না বলার ধমক দেন। এবং জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতির রুম থেকে দ্রুত বেরিয়ে যেতে বলেন। এসময় কেন বেরিয়ে যাবো কেয়া এই প্রশ্ন করলে জনৈক ফাল্গুনী তরফদার তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে আমার নির্দেশ মানতে হবে বলে তার দিকে তেড়ে আসেন। এসময় খাদিজা সুলতানা কেয়া নিজেকে রক্ষার জন্য ফাল্গুনী তরফদার কে আটকাতে চাইলে ফাল্গুনী তরফদার জোড়পূর্বক খাদিজা সুলতানা কেয়ার চুল ধরে টান দেন এবং ধূর্ত ফাল্গুনী তরফদার পা-পিছলে উল্টো নিজেই মেঝেতে পড়ে যান। এসময় খাদিজা সুলতানা কেয়া কিছু বুঝে ওঠার আগেই বিষয় টি ঘোলাটে করার উদ্যেশ্যে ফাল্গুনী তরফদার দ্রুত হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হন। এবং সেখানে সাংবাদিকদের ডেকে নিজের পেটে লাথি মেরে ফেলে দিয়েছে মর্মে সংবাদ মাধ্যমে একটি মিথ্যা বিবৃতি দেন। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ পাওয়ায় বিষয়টি টক অব দ্যা টাউনে পরিনত হয়।

    এ বিষয়ে খাদিজা সুলতানা কেয়ার কাছে বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি পারিবারিকভাবেই ছোট বেলা থেকে আমার বাবা চাচার কাছ থেকে শুনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ এবং মুক্তি যুদ্ধের চেতনা বুকে ধারণ করি। আমি ক্লাস এইট থেকে ছাত্র রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে আজ অবধি কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের অভিভাবক এবং বর্তমান সভাপতি আলহাজ্ব জাফর আলী চাচার সঙ্গে রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমি শত বাধা বিপত্তি পেরিয়েও কখনো আমার রাজনৈতিক আদর্শ থেকে নিজেকে বিচ্যুত করিনি। দীর্ঘদিন রাজনৈতিক অংগনে জড়িত থাকায় জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ সহযোগী অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা আমাকে তাদের ছোট বোন, ভাতিজী হিসেবে রাজনৈতিক সহমর্মিতা সবসময় পেয়েছি । এ সম্পর্কে আপনারা চাইলে জেলা আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের কাছে আমার সম্পর্কে জানতে পারেন। আমি কখনোই রাজনৈতিক এবং ব্যক্তিগতভাবে কারও সঙ্গে কোন অসদাচরণ বা অবৈধ কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিলাম না। কিন্তু অতি সম্প্রতি আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ার কে ধ্বংস এবং ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেদের পদ পদবি বাগিয়ে নেয়ার স্বার্থে বিভিন্নভাবে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার পায়তারা করে আসছে। তাকে উদ্দ্যেশ্যে করে তিনি আরও বলেন, যে মহিলা পারিবারিকভাবে নিজের ভাই বোনের সম্পদ অবৈধভাবে লিখে নেয়া সহ কুড়িগ্রাম জেলায় আসার পর থেকে বিভিন্ন মহিলাদের কাছ থেকে কাজ দেয়ার কথা বলে অর্থ হাতিয়ে নেয়া, পরিচিত অনেকের কাছে বিশাল অংকের টাকা ধার নিয়ে পরবর্তীতে অস্বীকার করা সহ বিতর্কিত একজন মহিলা হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত। সেই প্রতারক ফাল্গুনী তরফদার নিজেকে একজন বড় মাপের নেত্রী হিসেবে পরিচিতি পাওয়ার আশায় মিথ্যা নাটক সাজিয়েছে এবং আমাকে অপবাদ দিয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কেয়া আরও বলেন আমার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক পরিশ্রম এবং যে ত্যাগ স্বীকার করে আজকের এই অবস্থানে এসেছি এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত কে শক্তিশালী করার জন্য কুড়িগ্রাম জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতির নির্দেশে দিনরাত একত্রে কাজ করে যাচ্ছি, ফাল্গুনী তরফদার মূলত সেটি ব্যহত করার উদ্যশ্যে এবং পরিকল্পিতভাবে জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের বিতর্কিত করতে আমাকে জড়িয়ে তিনি এই নাটকীয় পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন। কোনো অনৈতিক ইশারায় রাজনৈতিক উদ্যশ্যে হাসিলের জন্য এবং জেলা মহিলা আওয়ামী লীগকে দূর্বল করার অপপ্রয়াসে তিনি এই কাজ করছেন কিনা তা সন্দেহ আছে বলে আমি মনে করেন। আপনার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে কোন ব্যবস্থা নিবেন কিনা জানতে চাইলে এ বিষয়ে খাদিজা সুলতানা কেয়া বলেন আমি শীঘ্রই বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মানবাতার মা জননেত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করব। আমি আমার বিরুদ্ধে মানহানিকর মিথ্যা বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর সমস্ত প্রমানাদিসহ এবং ফাল্গুনী তরফদার কর্তৃক বিভিন্ন সময় ক্ষতিগ্রস্ত সকল ভুক্তভোগীদের নিয়ে সাক্ষাত করার প্রস্তুতি নিচ্ছি বলে এই প্রতিবেদককে জানান।

    এদিকে ফাল্গুনী তরফদারের শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নিতে ৩১/০৭/২০২৩ ইং রাত দশটার দিকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে গেলে সেখান থেকে তিনি রিলিজ নিয়ে বাড়ি গিয়েছেন বলে কর্তৃপক্ষ জানান।

    এ সম্পর্কে খাদিজা সুলতানা কেয়া ঘটনার পরেরদিনের ০১/০৮/২০২৩ ইং তারিখের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের স্টাটাসে দেয়া একজন জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা সদস্যসহ একটি ভিডিও ক্লিপ দেখান। সেখানে দেখা যায় জনৈক ফাল্গুনী তরফদার সম্পূর্ণ সুস্থ হিসেবে ৪/৫ জন মিলে একটি মাইক্রোতে গান বাজিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এবং কেয়া জানান তিনি এর আগেও এরকম বিভিন্ন নাটক সাজিয়ে নিজের রাজনৈতিক পরিচয় বাড়ানোর উদ্দেশ্য নিয়ে নির্লজ্জ মিথ্যা অভিনয় করেছিলেন।

    অপরদিকে ফাল্গুনী তরফদারের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার সত্যতা যাচাই এবং খাদিজা সুলতানা কেয়ার রাজনৈতিক পরিচয় এবং অবস্থান সম্পর্কে জানতে কুড়িগ্রাম জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাবেক সংরক্ষিত আসনের মহিলা সংসদ সদস্য নাজমিন সুলতানা নাজলিকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে খাদিজা সুলতানা কেয়াকে একজন সত্যিকারের রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে সবসময় পাশে পেয়েছি। আমরা কুড়িগ্রাম জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের যেকোনো কর্মসূচি পালন করার ক্ষেত্রে খাদিজা সুলতানা কেয়ার অবদান অসামান্য। তার সম্পর্কে আমরা কখনোই বিতর্কিত কোন কর্মকাণ্ড জানতে পারিনি। এছাড়াও খাদিজা সুলতানা কেয়া আমাদের যেকোনো প্রোগ্রাম বা মিছিলে অংশগ্রহণ করে সে নিজেই স্লোগানে স্লোগানে নেতৃত্ব দিয়ে থাকে। এর জন্য খাদিজা সুলতানা কেয়াকে অনেকেই কুড়িগ্রামের স্লোগান কন্যা হিসেবেও চিনে বলে তিনি জানান।

    ফাল্গুনী তরফদারের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে নাজলী জানান, ফাল্গুনী তরফদার সম্পর্কে দলের ভিতর এবং বাহিরে অনেক বিতর্কিত কর্মকাণ্ড এর আগেও ঘটেছে। তিনি বিভিন্ন সময় আমাদের তৃনমুল রাজনৈতিক কর্মীর অর্থ আত্মসাৎ, ধার দেনা পরিশোধ না করা সহ পারিবারিকভাবেও তার নিজের রক্তের সম্পর্কের ভাই বোনদের সম্পদের অধিকার হরন করে নিজেই তা ভোগ করছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। তাই আমাদের জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের একজন নিবেদিত প্রান এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ধারন করে চলা জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রশ্নে আপসহীন, তৃনমুলের সবার পছন্দের নেত্রী, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বলিষ্ঠ ভুমিকা পালনকারী খাদিজা সুলতানা কেয়ার বিরুদ্ধে এ ধরনের মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অপপ্রচার দ্রুত বন্ধ করা নাহলে শীঘ্রই কুড়িগ্রাম জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সহ অন্যান্য সকল সহযোগী সংগঠন এর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে। এদিকে শেষ মূহুর্তে পাওয়া খবরে জানা যায় ফাল্গুনী তরফদার, খাদিজা সুলতানা কেয়ার নামে সেদিনের মিথ্যা হামলার ঘটনা সাজিয়ে কোর্টে একটি মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

    এ সম্পর্কে কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জাফর আলীর কাছে তার মন্তব্য জানার জন্য কয়েকবার ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

     

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ