• অটোটেক

    তোফাজ্জলকে চোর সন্দেহ পিটিয়ে জখম চাওয়া হয় মুক্তি; আটক তিন ঢাবি শিক্ষার্থী 

      প্রতিনিধি ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ১২:৫৯:১৩ প্রিন্ট সংস্করণ

     

     

    আব্দুল জব্বার :

     

    ঢাবির ফজলুল হক হলে চোর সন্দেহে এক যুবককে পিটিয়ে মেরে ফেলার ঘটনায় ৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। আজ বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তায় ফজলুল হক হল থেকে ওই তিন শিক্ষার্থীকে আটক করে শাহবাগ থানার পুলিশ।

     

    আটক শিক্ষার্থীরা হলেন।

    ১. পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের জালাল আহমেদ তার একটা পরিচয় জানা গেছে, সে ছাত্রলীগের সাবেক হল কমিটির উপবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ছিলো। তবে তার এই পরিচয় যেন শুধুমাত্র তার দিকেই সব দোষ চাপিয়ে দেওয়ার উপলক্ষ না হয়, কারণ ওইখানে আরও যারা যারা এই পিটুনির কাজে অংশ নিয়েছে এবং উৎসাহ যুগিয়েছে, এদের সবার পরিচয় তো ছাত্রলীগ না, মানে স্রেফ ছাত্র হিসাবেই সবাই এই অপরাধ করেছে। কাজেই ওইখানের সবার ওপর দিয়েই অপরাধের দায় যেতে বাধ্য)

    ২. মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের মোহাম্মদ সুমন;

    ৩. পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের মোত্তাকিন সাকিন।

     

    চোর সন্দেহে কিছুটা অপ্রকৃতস্থ তোফাজ্জলকে প্রথমে হলে ধরে নিয়ে গণপিটুনি দেওয়া হয়, এরপর তাকে হল ক্যান্টিনে ভাত খাওয়ানো হয়, সেই ছবি তুলে স্যোসাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয়, তারপর বিরতি দিয়ে আবার গণপিটুনি দিতে থাকে তারা। এরপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায় কয়েকজন এবং কর্তব্যরত চিকিৎসক জানায় সে মারা গেছে।

     

    শুধুমাত্র মাইরপিট করেই ক্ষান্ত হয়নি ওই ঘাতকেরা।

     

    কয়েকদফা মাইরপিটের পর তোফাজ্জলকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য ৩৫ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেছেন তোফাজ্জলের মামাতো বোন।

    তোফাজ্জলের মামাতো বোন একটা, ‘মূলত রাত ১১টার দিকে আমার বাবাকে ফোন দেওয়া হয়। বলা হয়েছে, আপনি কি তোফাজ্জলের মামা। ‘হ্যাঁ’ বলার পর, তারা বলে– আমরা ওরে আটক করেছি, হলে আছে। ওকে নিতে হলে টাকা দিতে হবে ৩৫ হাজার। ৩৫ হাজার টাকা দিয়া ছাড়ায়া নেন। নইলে আমরা তাকে ছাড়বো না, আরও মারব।’

    কত বড় অমানুষ ওরা চিন্তা করেন। এদের মনস্তত্ত্ব দেখে মনে হয় এরা ছাত্র হওয়ার যোগ্য? এরা তো দাগী ক্রিমিনালের মত মানসিকতা রাখে।

     

    তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, এটা কিছুটা মন্দের ভালো একশন। তবে এখানেই যাতে শেষ না হয়, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখলেই বুঝা যাবে এই পিটুনিতে আরও বেশি সংখ্যক ছাত্র জড়িত ছিলো। এদের প্রত্যেককে চিরুনি অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করতে হবে এবং শক্ত মামলা রুজু করে অত্যন্ত কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, তারা যেই হোক না কেন। তাতে তারা সাধারণ ছাত্র হোক, কোন রাজনৈতিক পরিচয় থাক বা না থাক, এসবের কোন হিসাব ম্যাটার করে না।

     

    ওই জায়গায় যারা উপস্থিত হয়ে পিটিয়ে তোফাজ্জলকে মেরে ফেলেছে, তারা সবাই এই হ ত্যা র আসামী। এদের সবাইকে জরুরিভিত্তিতে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে এসে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতেই হবে।

     

    দেশের শীর্ষ স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আচরণ যত এমন হয়। জাতি শিক্ষাগত দিক আর কতটা এগিয়ে নিয়ে যাবে সেই প্রশ্ন থেকে যায়। কতটা নিচু মনের মানসিকতা হলেও এমন কাজ করা যায়। এরা মেধা দিয়ে সরকারি চাকরিতে বড় পর্যায়ে বসলে কেমন হবে বগঝতে পেরেছেন। ক্ষমা করবেন সাঈদ আমরা অকৃতজ্ঞ।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ