প্রতিনিধি ৭ জানুয়ারি ২০২৩ , ৭:০২:১৪ প্রিন্ট সংস্করণ
‘বাংলাদেশ’ শুধুমাত্র একটি শব্দ আর কয়েকটি বর্ণমালার সমষ্টি নয়। বরং বাংলাদেশ হলো একটি স্বপ্ন, যে স্বপ্নের তরী বেয়ে আমাদের যেতে হবে বহুদূর। এই সূদুর প্রসারী পথ পাড়ি দিতে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা অপরিসীম। বিশ্ববিদ্যালয় হলো বিদ্যার সিন্ধু ছেঁচে মুক্ত আহরণের জায়গা, গবেষণা ও উচ্চ শিক্ষার পাদপীঠ। বিশ্ববিদ্যালয় কেবল প্রথাগত শিক্ষা প্রদান করে না, গবেষণার মাধ্যমে নতুন নতুন জ্ঞানের ক্ষেত্র তৈরী করে, নতুন জ্ঞান উৎপাদন করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা এগিয়ে নিতে বিশ্বের সকল বিশ্ববিদ্যালয়েই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করে থাকে। তার অংশ হিসেবেই বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় (বুটেক্স), বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা খাতকে আরও সময়োপযোগী ও যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার জন্যই প্রথমবারের মতো এ ধরনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন করতে যাচ্ছে।
এই সম্মেলনের মাধ্যমে দেশি বিদেশি বিভিন্ন গবেষকদের মধ্যে যেমন মিথস্ক্রিয়া ঘটবে তেমনি নবীন প্রবীন দ্বিমুখী গবেষকদের মেলবন্ধনের মাধ্যমে গবেষণার নতুন দিগন্তের উন্মোচন হবে। তৈরী হবে চিন্তার জগতে নতুন ধারনা , প্রসার হবে গবেষণা।
আগামী ১৯ ও ২০ই জানুয়ারী দুইদিনব্যাপী ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন টেক্সটাইল সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ২০২২’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।উপস্থিত থাকবেন, ভারতের ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির (আইআইটি) টেক্সটাইল অ্যান্ড ফাইবার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. বিজয় কুমার বেহেড়া ও বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আবুল কাশেম।
বিশেষ এই সম্মেলনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহারের পাশাপাশি উদ্ভাবনী শক্তি বাড়ানোর উপর জোর দেয়া হয়েছে। টেকসই উন্নয়নের চাবিকাঠি হলো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি। এই দুই অনুষঙ্গের ব্যবহার যত বাড়বে, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের মোকাবিলা বাংলাদেশের জন্য তত সহজ হবে।
সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা ফাইবার সাইন্স, ম্যানেজমেন্ট, ফ্যাশন ডিজাইন, গ্রিন কেমিস্ট্রি, টেকনিক্যাল টেক্সটাইল, ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেক্সটাইল, ইন্ডাস্ট্রি ৪.০ টেক্সটাইল, স্মার্ট টেক্সটাইল, ন্যানোটেকনোলজি ইন টেক্সটাইল, টেক্সটাইল অ্যান্ড এপারেল সাপ্লাই চেইন, এডভান্স অ্যান্ড ইমারজিং টেকনোলজি, সাস্টেইনঅ্যাবিলিটি অ্যান্ড সারকুলারিটি ইন টেক্সটাইলসহ বিশেষ বিষয়ে গবেষণাপত্র জমা দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
সম্মেলনের এক্সিকিউটিভ কমিটির অন্যতম সদস্য ড. দেওয়ান মোরসেদ আহমেদ বলেন, আনুমানিক ১০০ এর মতো পেপার জমা হয়েছে। ৫টি বিভাগে মোট ১৫টি বাছাই করা হবে। এসবের মধ্য থেকে সেরাটিকে বেস্ট পেপার অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হবে
অ্যাওয়ার্ড হিসেবে ক্রেস্ট দেওয়া হবে তবে বাছাই করা পেপার গুলোর মধ্যে থেকে কিছু সংখ্যক পেপার বুটেক্স জার্নালে প্রকাশ হতেও পারে নাও পারে তবে সেগুলো বুটেক্সের সাথে থাকা পাবলিকেশন প্রসিডিং এ প্রকাশ করা হবে।
মূলত সম্মেলনগুলোতে প্রসিডিং আকারেই প্রকাশ করা হয়। পাবলিকেশনের লিস্ট সম্মেলনের দিনই অংশগ্রহণকারীদের দেওয়া হবে।
সম্মেলন আয়োজন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাধারণত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যা যা থাকে সেইগুলোই আয়োজন করা হবে। মূল কাজের দায়িত্ব টেকনিক্যাল ও আয়োজক কমিটির। মূলত রেজিস্ট্রেশন, পেপার বাছাই টেকনিক্যাল কমিটির কাজ। এছাড়াও প্রেজেন্টেশন দিকটাও উনারা দেখবেন।
অতিথি এবং বাইরের দেশ থেকে কে কে আসবেন এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ইন্ডিয়া থেকে দিল্লির আইআইটির টেক্সটাইল অ্যান্ড ফাইবার সাইন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. বিজয় কুমার বেহেড়া এবং তার শিক্ষার্থী বুটেক্সের ৩৫তম ব্যাচের সৌম্য চৌধুরীও থাকবেন। এছাড়াও অনলাইনে বেশ কিছু অতিথি যুক্ত থাকবেন। আমাদের টেকনিক্যাল কমিটি এই বিষয়টা দেখছেন। যার মধ্যে অন্যতম যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ম্যানচেস্টার থেকে ড. আবু সাদাদ মোহাম্মদ সায়েম। এছাড়াও দেশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়সহ বুটেক্স অধিভুক্ত কলেজ থেকেও অনেকে থাকবেন। তবে সম্মেলনে সব অতিথিদের তালিকা একসপ্তাহ পরে জানা যাবে।
আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে টেক্সটাইল সেক্টরের ভূমিকা যে অপরিসীম সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। দেশের অর্থনীতির অন্যতম এই স্তম্ভের পরিচর্যা ও উন্নত করার জন্য দেশের একমাত্র এই বিদ্যাপীঠে এ ধরনের সম্মেলনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা এখন সময়ের দাবি