• সারাদেশ

    ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত ছেলেকে বাঁচাতে মা-বাবার আকুতিপ্রেস রিলিজঃ সাথিয়ার আলোচিত রাজা হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন। গত ইং ১৭/০৭/২০২২ তারিখ সন্ধ্যা অনুমান ০৭ ঘটিকার সময় ভিকটিম রাজা প্রাং (৫০), পিতা-মৃত সিরাজ প্রাং,সাং-শ্রীধরকুড়া, থানা-সাঁথিয়া, জেলা-পাবনা তার পূর্ব পরিচিত মোঃ অনিক হোসেন (১৮) ও হৃদয় হোসেনর (১৯) সাথে প্রতিবেশি জয়নালের (২৫) সিএনজি করে পিকনিক খাওয়ার কথা বলে বরাট, কাশিনাথপুরের দিকে যায়। যথাসময়ে ভিকটিম রাজা প্রাং বাড়ীতে না ফেরায় রাজার স্ত্রী মোছাঃ রাশিদা রাজার মোবাইল নাম্বারে ফোন দিলে সিএনজি চালক জয়নাল ফোনটি রিসিভ করে বলে যে, তার কাছে ভিকটিম রাজা মোবাইল ফোনটি রেখে কোথায় যেন চলে গেছে। ঐ দিন রাত্রিতে ভিকটিম রাজা প্রাং বাড়ীতে ফেরত না আসলে পরিবারের লোকজন রাজা প্রাং-কে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করিতে থাকে। খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে গত ইং ২০/০৭/২০২২ তারিখ সকাল অনুমান সকাল ০৯.০০ ঘটিকার সময় সাঁথিয়া থানাধীন সোনাকুড়া বরাট গ্রামের সরকারী ক্যানেলের কচুরি পানার মধ্যে ভিকটিম রাজার অর্ধগলিত লাশ পাওয়া যায়। বিষয়টি হত্যাকান্ড হিসেবে প্রাথমিক ভাবে ধারণা হওয়ায় ভিকটিম রাজার স্ত্রী মোছাঃ রাশিদা বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন যার মামলা নং-২২, তাং-২১/০৭/২০২২ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে তৎকালীন পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান বিপিএম স্যারের নির্দেশনায় ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে ১। সিএনজি চালক জয়নাল (২৫) ২। মোঃ হৃদয় হোসেন (২০) এবং ৩। পিয়াস সরকার (২৩) দের গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক আসামী গণ এই হত্যাকান্ড সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করলে তাদের অত্র মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়। পরবর্তীতে পাবনা জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আকবর আলী মুনসী স্যারের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে জনাব মোঃ মাসুদ আলম,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ), জনাব কল্লোল কুমার দত্ত, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, (বেড়া সার্কেল), জনাব আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম, অফিসার ইনচার্জ এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই ইমতিয়াজ এর নেতৃত্বে একটি চৌকস টিম ঢাকা,গাজীপুর ও সিরাজগঞ্জ এর শাহজাদপুর থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে ১। মোঃ মামুন খান (২৩), পিতা-মোঃ দুলাল খান এবং ২। মোঃ আশিক ফকির (২৫), পিতা-মোঃ আনিছ ফকির , উভয় সাং-সোনাকুড়া বরাট,থানা-সাঁথিয়া, জেলা-পাবনাদ্বয়কে গ্রেফতার পূর্বক বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ মামুন খান (২৩) বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। আসামী মোঃ মামুন খান (২৩) এর প্রদত্ত জবানবন্দিতে জানা যায় যে, ভিকটিম রাজা প্রাং মাদকের সাথে সম্পৃক্ত ছিল। মাদক খাওয়ার টাকা পয়সাকে কেন্দ্র করে আসামী হৃদয় এবং অনিকের সাথে ঝামেলা ছিল। অপর আসামী মামুন এবং জুয়েলের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে সাথিয়া থানায় মাদকদ্রব্য আইনে একটা মামলা হয়। এই মামলার সোর্স হিসেবে ভিকটিম রাজা ছিল বলে আসামীদের ধারণা। আর এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী রনির সাথে খাসের পুকুর ও জমির দখল নিয়ে বিরোধ ছিল। উক্ত বিরোধ ও পূর্বশত্রুতার জের ধরে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে কৌশলে ভিকটিম রাজা প্রাং-কে মোঃ জয়নাল এর সিএনজি যোগে মোঃ হৃদয় ও মোঃ অনিক কে দিয়ে ডেকে নিয়ে আসার পর মাদকদ্রব্য গঁাজা খাওয়ার কথা বলে সোনাকুড়া বরাট গ্রামের সরকারী ক্যানেলের ধারে পাটক্ষেতে নিয়ে যায় এবং রাত্রি অনুমান ১০.০০ ঘটিকা হতে ১১.০০ ঘটিকার মধ্যে আসামী মোঃ রনির নেতৃত্বে মোঃ হৃদয়, মোঃ জয়নাল, মোঃ অনিক, মোঃ জুয়েল, মোঃ মামুন, মোঃ আশিক, এনামুল হক ও মোঃ সোহেলগন মিলে ভিকটিম রাজাকে গলাটিপে হত্যা করে মৃতদেহ পার্শ্ববর্তী ক্যানেল-এ কচুরিপানার মধ্যে লুকিয়ে রাখে। আসামী মোঃ জয়নাল এর নিকট হতে ভিকটিম রাজা প্রাং এর ব্যাবহৃত মোবাইল ফোন ও সিএনজি গাড়ী উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা আছে

      প্রতিনিধি ২১ নভেম্বর ২০২৩ , ১:০১:৩০ প্রিন্ট সংস্করণ

     

    বেড়া-সাঁথিয়া (পাবনা) প্রতিনিধিঃ পাবনা সাঁথিয়া উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়–য়া রিফাত (১৩) কৈশরের প্রাণোচ্ছ্বল পদচারণায় কয়েকদিন আগেও মুখর ছিল ক্লাসরুমের সামনের বেঞ্চ, স্কুলের মাঠ, বাড়ির উঠান। রিফাত উপজেলার করমজা ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের ৩৬ নং পুন্ডুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র। তার পিতা আরিফ একজন হতদরিদ্র ঝালমুড়ি বিক্রেতা। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে পাঁচজনের সংসার তার।

    সরেজমিনে করমজা ইউনিয়নের পুন্ডুরিয়া কারিগর পাড়া তার বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, কখনো পথে কখনো স্কুলের পাশে ঝালমুড়ি বিক্রি করে প্রতিদিন দুই থেকে তিন শ টাকা আয় করেন রিফাতের বাবা। এই অল্প আয়ের সংসারের বড় সন্তান রিফাতের মাঝে মধ্যে মাথা ব্যাথা করত। দিন দিন তার মাথা ব্যাথার অবস্থা অবনতি হয়। রিফাতকে প্রথমে স্থানীয় উপজেলা স¦াস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়, পরবর্তীতে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মানসিক ও ব্রেন রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. তাহরিমা মোস্তারীকে দেখানোর পর তিনি জানিয়েছেন রিফাতের ব্রেনে টিউমারের সৃষ্টি হয়েছে এবং ব্রেনে ইনফেকশন সে ক্ষেত্রে অপারেশন ছাড়া তাকে বাঁচানো সম্ভব নয় এবং জরুরি ভিত্তিতে শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। অন্যথায়, তার জীবন নাশের আশংকা রয়েছে। অসহায় রিফাতের শারীরিক সমস্যা দিন দিন জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে।

    সবশেষে ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ডাক্তাররা । সেই কিশোরপ্রাণ টাকার অভাবে চিকিৎসাহীন অবস্থায় আজ শুয়ে আছে বাড়ির বিছানায়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন অস্ত্রোপচারের জন্য তার অনেক টাকার দরকার। রিফাতের বাবা আরিফ একজন হতদরিদ্র ঝঁলমুড়ি বিক্রেতার পক্ষে এতো টাকা জোগাড় করার সামর্থ্য নেই। আরিফ এর সংসারে স্ত্রী ও তিন সন্তান রয়েছে।

    রিফাতের বাবা আরিফ হোসেন কাঁদতে কাঁদতে বলেন, সহায় সম্বল হিসেবে আমার কিছুই নেই। আমার ছেলের চিকিৎসা বাবদ এপর্যন্ত ৫০/৬০ হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে যা সবই কিস্তি আর ধারদেনা করেছি। একদিন ঝালমুড়ি বিক্রি না করলে আমার সংসার চলে না। কিভাবে এত টাকা দিয়ে আমার ছেলের চিকিৎসা করাবো? বাবা হয়ে দিনরাত ছেলের কান্নাকাটি আর সহ্য করতে পারছি।

    এমতাবস্থায় অসহায় হতদরিদ্র পিতা-মাতা রিফাতের সুচিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবান, হৃদয়বান ও দানশীল ব্যক্তির সাহায্য কামনা করেছেন।

    পুন্ডুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.রফিকুল ইসলাম বলেন, ছেলেটি অত্যন্ত ভদ্র ও মেধাবী ছিল। তার এই বয়সে এমন জটিল রোগ আসলেই খুবই কষ্টকর। আমার স্কুল এবং আমি ব্যাক্তিগতভাবে যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি। রিফাতের সুচিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবানদের সহযোগীতা কামনা করছি।

    বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ফাতেমাতুয্ জান্নাত জানান, ‘রিফাতের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ও পরিক্ষার কাগজপত্র দেখেছি। তাতে দেখা গেছে সে ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত। এজন্য জরুরি ভিত্তিতে তার অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউিট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের মতো বড় কোনো হাসপাতালেই এধরনের রোগের অস্ত্রোপচার সম্ভব’।

    সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ আলম বলেন, আমাদের উপজেলা প্রশাশনের সমাজসেবা অধিদপ্তরে থেকে শিশুটির চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতা করা হবে। আমি তার খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি তার চিকিৎসা করার জন্য আর কি ধরনের সহযোগিতা করতে পারি।

    রিফাতের উন্নত চিকিৎসার জন্য কমপক্ষে পাঁচ লাখ টাকা প্রয়োজন। চিকিৎসার্থে সহযোগিতা করতে রিফাতের মা রিতা খাতুনের ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড এর পুন্ডুরিয়া এজেন্ট শাখা হিসাব নং- ২০৫০৭৭৭০২১৫৯৭০৫০১, বিকাশ ও নগদ নম্বর: ০১৭৮৪-৮৯৯১২০,নগদ: ০১৭০৯-০১০৬৪০

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ