প্রতিনিধি ৫ ডিসেম্বর ২০২২ , ৭:২৫:২৩ প্রিন্ট সংস্করণ
সুজন শেখ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি; দিনাজপুরের খানসামায় খামারপাড়া ইউনিয়নের কায়েমপুর গ্রামের ডাক্টারপাড়ার প্রথম শ্রেণীর ছাত্র আরিফুরজ্জামান (৮) অপহরনের ৩ দিন পর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
মৃত শিশু আরিফুজ্জামান (৮) ওই এলাকার আতিউর রহমানের ছোট ছেলে।
রবিবার দিবাগত রাত ২ ঘটিকায় উপজেলার পাকেরহাটের আরজি যুগিরঘোপা গ্রামের জনৈক আব্দুস সালামের ভাড়া দেওয়া বাড়ির উঠান খুঁড়ে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
মৃত আরিফুজ্জামানের বাবা আতিউর বলেন, গত শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) আমরা বাপ ছেলে সকালে রসুন রোপন করতে জমিতে যাই। গোসল শেষে জুম্মার নামাজ পড়তে যায়, নামাজ থেকে ফিরে একসাথে দুপুরের খাবারও খেয়েছি। এরপর বিকেলে বাইরে খেলতে গেছে। সন্ধ্যার অনেক পরও যখন বাসায় ফিরছিল না তখন খোঁজাখুঁজি শুরু করি। সন্ধ্যা ৭টায় ফোনে একজন বলে আপনার ছেলেকে কিডন্যাপ করেছি। ছেলেকে পেতে হলে এক লাখ টাকা নিয়ে সৈয়দপুর বাস টার্মিনালে আসেন। টাকা নিয়ে আসলেই আপনার ছেলেকে পেয়ে যাবেন। এরপরই ফোন নাম্বারটিসহ খানসামা থানায় যোগাযোগ করি এবং লিখিত অভিযোগ করি। রাত নয়টার সময় আবারও ওই নাম্বার থেকে ফোন আসে। কিন্তু কোন কথা না বলেই ফোন কেটে দেয়।
পুলিশ জানায়, শিশুটি নিখোঁজ হলে আমাদের কাছে তার পরিবার সাধারণ ডায়েরি করে। ডায়েরি আমলে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। ভিকটিমের পরিবার ও স্থানীয় লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রাপ্ত হয়ে সন্দেহ ভাজন হিসেবে বাদীর প্রতিবেশি শরিফুল ইসলাম (২৪) সহ আরো কয়েকজনকে নজরে রাখি।
নিবিড় ও নিরবিচ্ছিন্ন জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া শরিফুল ইসলাম (২৪) অপহরণ, মুক্তিপণ দাবি ও ধর্ষণ এবং শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করে। মৃত শিশুর সন্ধান দিতে রাজি হয়।
এরপর শরিফুলের দেওয়া ঠিকানায় গিয়ে পুলিশ ও ডিবি কর্মকর্তাসহ গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন স্থানীয়দের উপস্থিতিতে বস্তায় ভরে মাটিতে পুঁতে রাখা লাশ উদ্ধার করা হয়।
আসামী শরিফুল ইসলাম একই পাড়ার আব্দুল মালেকের ছেলে। খানসামা বিএম কলেজে কম্পিউটার ট্রেড নিয়ে পড়ছেন। পাকেরহাট এলাকায় একটি বাসায় ভাড়া থাকেন। পড়াশুনার পাশাপাশি সেখানে কিছু ছাত্রকে কম্পিউটার প্রশিক্ষনও দেন তিনি।
খানসামা থানার অফিসার ইনচার্জ চিত্তরঞ্জন রায় জানান, ঘটনাটি জানার পর থেকেই শিশুকে উদ্ধারে পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা কাজ চালিয়ে যায়। প্রযুক্তি ব্যবহার করে সন্দেহজনক হিসেবে শরিফুলকে আটক করে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। আসামীকে আদালতে পাঠানো হবে.