প্রতিনিধি ২৯ মে ২০২৩ , ৩:৩৪:২৯ প্রিন্ট সংস্করণ
পরান আহসান ভোলা- প্রতিনিধি :
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার দুলার হাট থানায় দুই সন্তানের জননী রোকেয়া বেগম (৩০) ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে, প্রতিবেশী সালাউদ্দিন বেপারির (৪০) বিরুদ্বে। এ বিষয় দুলার হাট থানায় ৪ জনকে আসামী করে নাড়ী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন রোকেয়া?।
আজ রবিবার ,২৮মে বিকেলে সরেজমিনে গেলে স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানা যায় চরফ্যাশন উপজেলার দুলার হাট এলাকার আবুবকরপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের স্বামী পরিত্যাক্তা রোকেয়া দুই সন্তান নিয়ে বাবার বাড়ীতেই থাকতেন,বাসা বাড়ীতে কাজ করে,মানুষের কাছ থেকে জমি বর্গা নিয়ে কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
এ বিষয় ভুক্তভোগী রোকেয়া বেগম এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি দুলারহাট থানাধীন আবুবক্করপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা অভিযুক্ত সালাউদ্দিন বেপারী ও আমি পাশাপাশি বাড়িতে বসবাসকরি, সালাউদ্দিন বেপারী একজন লম্পট প্রকৃতির লোক। আমার স্বামী না থাকায় আমি পিতার বাড়ীতে বসবাস করি। আমার বাবা মা কেউ বেচে নেই। এ সুযোগে সালাউদ্দিন বেপারী প্রায় সময় আমাকে একা পেয়ে বিভিন্ন ধরনের কু-প্রস্তাব দিয়ে আসতেছে। আমি বিষয়টি তার বাবা মা স্ত্রী কে জানালে তাহারা আমার কথার কোন গুরুত্ব দেয় না। তারই ধারাবাহিকতায় গত২৪/০৫/২০২৩ তারিখ ভোর অনুমান ০৪.৫০ ঘটিকার সময় আমি ঘুম থেকে উঠে ঘরের দরজা খোলা রেখে বাথরুমে যাই। সুযোগ বুঝে সালাউদ্দিন বেপারী কৌশলে আমার বসত ঘরে প্রবেশ করে অবস্থান নেয়। একই তারিখ অনুমান ০৫.০০ ঘটিকার সময় আমি বাথরুম হতে ঘরে মধ্যে আসলে সালাউদ্দিন বেপারী পিছন হতে মুখ চেপে ধরে আমার বসত ঘরের মেঝেতে ফেলে আমাকে ইচ্ছের বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষন করে। সালাউদ্দিন বেপারী আমাকে হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরার কারনে আমি ডাকচিৎকার করতে পারি নাই। ধর্ষণ শেষে সালাউদ্দিন বেপারী পালানোর সময় আমি তাকে ঝাপটে ধরে ডাকচিৎকার দিতে থাকি। তখন সালাউদ্দিন বেপারীর ভাই, বাবা, ও তার স্ত্রী লাঠিশোঠা নিয়ে আমার বসত করে অনধিকার প্রবেশ করে আমাকে এলোপাথারীভাবে পিটিয়ে লাথি মেরে এবং চুলের মুটি ধরে টেনে হিচরে নিয়ে মারধর করে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় হুমকি ধামকী দিয়ে বলে বিষয়টি নিয়ে যদি আমি বেশি বাড়াবাড়ি করি তাহলে বিবাদীরা আমার বড় ক্ষতি করবে। যাহার বহু সাক্ষ্য প্রমান আছে।
রোকেয়া বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে আরো বলেন ঘটনার বিষয়টি আবুবকরপুর ইউপি চেয়ারম্যানকে সিরাজ জমদার কে অবহিত করলে চেয়ারম্যান বিষয়টি তেমন কোন গুরুত্ব দেয় না। যাহার কারনে চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে ও তার নির্দেশে স্থানীয় রৌদ্দেরহাট বাজারে আমাকে এলোপাথারীভাবে মারধর করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। রৌদ্দেরহাট বাজারের অনেক লোকজন দেখে। তারপর আমাকে খুনের হুমকি ধামকী দিয়ে ঘটনাস্থল হতে তারা চলে যায়। একপর্যায়ে আমি নিরুপার হয়ে ঘটনার বিষয়টি নিয়ে নিকট আত্মীয় স্বজনসহ এলাকার ব্যক্তিবর্গদের জানিয়ে তাদের সহিত আলাপ আলোচনা করে গত ২৬ মে শুক্রবার থানায় এসে মামলা করি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রোকেয়ার দুই প্রতিবেশী মহিলা বলেন,সেদিন ভোর বেলায় ঘটনা আমরা দেখেছি, চেয়ারম্যান কিভাবে তার লোকজন দিয়ে এই অসহায় মহিলাকে মারধর করেছে সেটাও দেখেছি,কিন্তু আমাদের কিছু করার নেই সালাউদ্দিন বেপারীরা অনেক প্রভাবশালী।
উক্ত আবুবকরপুর ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজ জমদার কে মুঠোফোনে ধর্ষণের বিষয়ে বিচার চাইতে গিয়ে তার উপস্থিতি ও নির্দেশে উল্টো মারধরের শিকার হওয়ার বিষয় প্রশ্ন করা হলে, তিনি এবিষয় কথা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করে বলেন আমি এখন ঢাকায় আছি, আমি ডাঃ কাছে যাচ্ছি বলে ফোন কেটে দেন।
এদিকে দুলার হাট থানার ওসি আনোয়ারুল হক দৈনিক আজকের দর্পণ কে বলেন থানায় মামলা হয়েছে আসামী গ্রেফতার করার সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। দায়ের হওয়া মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মোঃ মুসা, তিনি এ প্রতিবেদক কে বলেন খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই আমরা আসামী গ্রেফতারে সক্ষম হব।