• আরো

    ২৬ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করে আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর পেলেন সিরাজ মিয়া

      প্রতিনিধি ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৬:৪৮:৩২ প্রিন্ট সংস্করণ

     

    বেড়া-সাঁথিয়া প্রতিনিধি: সব থেকেও যেনো কিছু নেই। আছে শুধু বুক ভরা কষ্টের দীর্ঘশ্বাস।সব ছেড়ে নদীতে একাকী ভাসমান ঘর বানিয়ে বসবাস। মাছ শিকার করে চলছে জীবন জীবিকা। এমন মানবতার জীবন যাপন ছিলো পাবনার বেড়া উপজেলার সিরাজ মিয়ার।ছাব্বিশ বছর ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে কৈটোলা পাম্পিং স্টেশন এর পাশে কাগেশ্বরী নদীতে প্লাস্টিকের ড্রামের উপর ভাসমান ঝুপড়িতে।কষ্টের জীবনধারণ করে আসছিলেন দুই পুত্র চার কন্যা সন্তানের জনক সিরাজ মিয়া। ৭০ বছর বয়সী সিরাজ মিয়ার জীবনের গল্প টা সমাজের অন্য দু’চার জনের থেকে একেবারে আলাদা। জন্মের পর স্বাভাবিক ছিলো সব কিছু,ছিলো পরিবার সংসার পায়ে হেটে চলাচলের ক্ষমতা।

    এক অজানা অসুখে হারাতে হয়েছে দুইটি পা,চলাচলের সক্ষমতা হারিয়ে অনেকটা বোঝা হয় পরিবারের কাছে। তবু থেমে নেই জীবন পরিবারের অবহেলায় অভিমানে ছাব্বিশ বছর পরিবার ছাড়াই নদীতে বসবাস। পানিতে হাত ব্যাবহার করে নৌকা চালিয়ে খুবই সহজে এক জায়গায় থেকে অন্য জায়গায় যাওয়া যায়। তাই তিনি নৌকার জীবন বেঁছে নিয়ে ছিলেন। নদীতে মাছ শিকার করে স্থানীয়দের নিকট বিক্রয় ও আত্মাীয় স্বজন এলাকাবাসীর সহায়তা টিকে ছিলে নদীতে নৌকার জীবন। এলাকা বাসির সহায়তায় নদীতে প্লাস্টিকের ড্রামের উপর ভাসমান ঝুপড়িতে বসবাস ছিলো তার। সিরাজ মিয়া সকলে হতভম্ব করে দিয়ে দেখিয়ে দিলেন ইচ্ছাশক্তি থাকলে সকল প্রতিকূলতা জয় করা যায়। এবার ২৯ আগস্ট মঙ্গলবার বেড়া উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ভাসমান ঝুপড়িতে বসবাসের অবসান ঘটিয়ে মাথা গোজার নতুন ঠাই পেলেন প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরে।নতুন ঘর পেয়ে অনেক খুশি সিরাজ মিয়া।

    তার এ জীবনযাত্রার গল্প জানতে চাইলে সিরাজ মিয়া বলেন,আমি চাই না কেউ আমার জন্য কষ্ট পাবে। আমি পায়ে হেটে কোথাও যেতে পাড়ি না।হাটা চলা করতে অন্যর সহযোগিতা লাগতো,কে কত সময় পাশে থাকবে। সবার তো নিজের ও কাজ থাকে। নৌকায় খুব সহজে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়া যায়।সবার সাহায্য-সহযোগিতায় প্লাস্টিকের দামের উপর ঘর বানিয়ে বসবাস করেছি। ঝড়-বৃষ্টি সবকিছু মাথার উপর দিয়ে গিয়েছে।মাছ শিকার করে স্থানীয়দের কাছে বিক্রয় করতাম।কিছু টাকা পয়সা পাওয়া যায়, সে টাকা বউয়ের কাছে দেওয়া হয় বউ বাজার করে রান্না করে দেয়।

    এ জীবন ভাল লাগেনা তবু মাঝে মাঝে মেনে নিতে হয়। উপজেলা থেকে আশ্রয়ন প্রকল্পে আমাকে জমি সহ ঘর উপহার দিয়েছে।এ ঘর পেয়ে আমি অনেক খুশি আমার জীবনের আশা ছিলো একদিন নতুন ঘর হবে আমার। আশা পূরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা। এ বিষয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহা সবুর আলী জানান,বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পাড়ি কৈটোলা ইউনিয়নে কাগেশ্বরী নদীতে প্লাস্টিকের ড্রামের উপর ভাসমান ঝুপড়িতে বসবাস করেন সিরাজ মিয়া।

    আমার তদন্ত করে তাকে নদী থেকে তুলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ন প্রকল্পে জমি সহ একটি ঘর উপহার দিয়েছি।এটি আমাদের দায়িত্ব সেখান থেকেই কাজ টা করেছি।এমন অসহায় মানুষের পাশে বেড়া উপজেলা প্রশাসন সব সময় থাকবে।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ