প্রতিনিধি ৬ মার্চ ২০২৩ , ৬:৪১:০৬ প্রিন্ট সংস্করণ
পরান আহসান স্টাফ রিপোর্টার :
মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার চরগোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের সময়ক্ষেপনের ৭ দিন পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে গৃহবধূকে পাশবিক নির্যাতন ও ধর্ষণ চেষ্টার ৭দিন পর থানায় মামলা দায়ের করলো নির্যাতিত গৃহবধূ।
রবিবার (৫মার্চ) উপজেলার নির্বাহী অফিসার মো: নুরুন্নবী’র সহযোতীয় মেহেন্দিগঞ্জ থানায় মামলা করা হয়।
ঘটনাসুত্রে জানা যায়, মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ৮নং চরগোপালপুর ইউনিয়নের ৩নং জালিরচর গ্রামের ঐ গৃহ বধুকে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে একা পেয়ে মুখোশধারী ৩ বখাটে হাত-পা ও মুখ বেঁধে নিজ ঘরের শ্লীলতাহানি করে। এ সময় গৃহবধূ প্রতিবাদ জানালে তাকে মারধর করে জিহ্বা বেঁধে রাখে ঐ মুখোশধারীরা।
বিষয়টি পরদিন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানালে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বিচারের আশ্বাস দেয়া হয় বলে জানান ভিকটিমের পরিবার। খবর পেয়ে মেহেন্দিগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও অজ্ঞাত কারনে শ্লীলতাহানীর বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে মারামারিকে গুরুত্ব দেয়। পরবর্তীতে স্থানীয় এক সাংবাদিকের মাধ্যমে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অবগত হলে তার হস্তক্ষেপে ঘটনার ৭দিন পর রবিবার ভিকটিমের স্বামী মোঃ জসিম গাজী বাদী হয়ে মেহেন্দিগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মেহেন্দিগঞ্জ থানা মামলা নাম্বার-২/৩৮, তারিখঃ ০৫/০৩/২০২৩ ইং, ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সংশোধনী ২০২৩ এর ৯(৪) (খ) তৎসহ ৩২৩ পেনাল কোড। মামলা সূত্রে জানা যায়, চরগোপালপুর ইউনিয়নের জালিরচর গ্রামের এক সন্তানের জননী ভিকটিম ও তার শ্বাশুরি বাড়িতে থাকেন। জীবিকার সুবাদে ভিকটিমের স্বামী মো: জসিম ও তার অন্যান্য ভাইয়েরা অন্যত্র থাকেন। ঘটনার দিন বিকেলে শাশুড়ি পাশ্ববর্তী বাড়িতে যান। তখন ভিকটিম নিজ ঘরে শিশু সন্তানসহ ছিলেন। এই সুযোগে একই এলাকার ইসমাইল হাওলাদারের ছেলে রায়হান হাওলাদার এবং শফি গাজীর ছেলে আবদুল্লাহ গাজী মুখোশ পড়ে ঘরে ডুকে ভিকটিমের হাত-পা ও মুখ বেঁধে শ্লীলতাহানি ঘটায়।
এসময় ভিকটিম বাঁধা প্রদান করলে তাকে দুজনে মিলে এলোপাথাড়ি মারধর করেন। অপর যুবক মহিম গাজী ঘরের বাহিরে পাহারা দেন বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানান ভিকটিমের শাশুড়ি। তিনি আরো জানান, প্রায় ৫০ মিনিট পর পাশের বাড়ি থেকে ফিরে এসে পুত্রবধূকে ডাকাডাকি করলে ঘর থেকে গোঙ্গানির শব্দ পায়। তখন পুত্রবধূ কে হাত পা ও মুক বাধা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ডাক চিৎকার দিলে এলাকার লোকজন জড়ো হয়। তখন গৃহবধূ তাদের কাছে ঘটনা খুলে বলেন।
এ ব্যাপারে চরগোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রভাষক সামসুল বারী মনিরের নিকট জানতে চাইলে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে জানান, মারামারি বিচার চেয়ে ভিকটিমের পরিবার পরিষদে দরখাস্ত দিয়েছেন কিন্তু শ্লীলতাহানির ব্যাপারে তাকে কিছুই জানাননি ভিকটিমের পরিবার। অপর দিকে মেহেন্দিগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ শফিকুল ইসলাম সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ভিকটিমের প্রাথমিক জবানবন্দী এবং লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। তবে ঘটনা শুনেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল কিন্তু তখন ভিকটিম শ্লীলতাহানির বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। এ ব্যাপারে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নুরুননবী সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, সাংবাদিকের মাধ্যমে ঘটনা শুনে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে ভিকটিমকে থানায় পাঠানো হয়েছে।