প্রতিনিধি ২৬ ডিসেম্বর ২০২২ , ৮:২৫:২৩ প্রিন্ট সংস্করণ
কোথা সে বাংলাদেশ
যেন চিত্র পটে আঁকা,
বিল-ঝিল-নদী-নালা
শাপলা শালুকে ঢাকা ।
গভীর অরণ্যে পাখির কাকলী
রচিত গানের মালা,
জ্যোত্স্না রাতে চাঁদ হত বধূ
আঁধারে তারার খেলা ।
চন্দ্রালোকে ডানা মেলে সব
পরীরা আসত রাতে,
কুয়াশায় ঢাকা পৃথিবী ঘুমাত
চাঁদ ঘুমাত সাথে ।
বসন্ত আসিত কোকিল ডাকিত
কতনা মধুর সুরে,
ভালে ডালে কত ফিঙে নাচিত
লেজটি তাহার ঘুরে ।
নদীর জলে পালের তরী
বয়ে যেত সারা দিন,
ছইয়ের উপরে মাঝি-মাল্লা
বাজাতো সাধের বীণ।
মধ্য রাতে জলের সাথে
চাঁদনী করত খেলা,
দুপুর হলেই দুষ্টুরা সব
ভাসিয়ে দিত ভেলা।
পল্লী বধু জলকে যেত
গৃহ কর্মের ফাঁকে,
গল্পে স্বল্পে পথ চলিত
সোনার কলসি কাঁকে।
স্নেহাদরে গড়া সম্পদে ভরা
আমার সোনার দেশ,
রূপের রানী নামটি যেন
রূপের নেইকো শেষ।
মুক্তি সেনার রক্তে কেনা
স্বপ্নের স্বাধীনতা,
শীতল মাটিতে ঘুমিয়ে ওরা
বুকে নিয়ে কত ব্যথা ।
তোর তরে মা যুদ্ধ করে
জীবন দিয়েছি কত,
সে ব্যথায় আজ অশ্রু ঝরে
নয়নে অবিরত ।
শত সাগরের রক্ত দিয়ে মা
স্বাধীন করেছি তোরে,
কাল বাদে মা আজকেই তুমি
ভুলিয়া গিয়াছ মোরে ।
সেই সে মানুষ সেই সে মাটি
চাই-ই আমার চাই,
যে মাটিতে সুখ আর সুখ
কোন বিদ্বেষ নাই ।
সেই বাংলার প্রকৃতি আজি
গুমরে গুমরে কাঁদে,
কোন শোভা নাই বেদনা-বিষাদ
আকাশের ঐ চাঁদে ।
আকাশ যেন ধূ-ধূ প্রান্তর
ছায়া পথ নাহি আর,
চির আঁধারে ডুবিছে জাতি
উদ্ধার নাহি তার ।
উত্তম-অধম নেই কোন ভেদ
আচরণেও নয় ভিন্ন,
ডিগ্রী অঢেল, ঘরে ধরে না
নেই শিক্ষার কোন চিহ্ন ।
পণ্ডিত বকে মূর্খের মত
মূর্খের নাহি ভাষা,
কোথা পাব বল সান্ত্বনা তবে
তিরোহিত সব আশা ।
পৃথিবীতে কত আদর্শ আছে
জ্ঞানী গুণির মাঝে,
শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষেরে নাহি
জ্ঞানহীন হওয়া সাজে ।
সব নিয়ে নাও, ফিরে দাও মোরে
সেই সে বাংলাদেশ,
ফুলে-ফলে ভরা পুষ্পকানন
যেন সে পরির দেশ ।
ফিরে যাব আমি চির ঠিকানায়
এ নিঃশ্বাস হলে গত,
তবু মনে হয় বাংলায় থাকি
চির জীবনের মত ।
মোঃ আব্দুর রাজ্জাক (অবঃ শিঃ)
সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি)
কাশিনাথপুর বিজ্ঞান স্কুল