প্রতিনিধি ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ১:১৫:৩৯ প্রিন্ট সংস্করণ
ভোলা জেলা প্রতিনিধিঃ
ভোলার চরাঞ্চল ও বিভিন্ন গ্রাম থেকে কৃষকের গরু, মহিষ ছাগলসহ পশু চুরি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।চুরি হয়ে যাওয়া পশুর অসহায় মালিকগন কান্নাকাটি করে কয়েকদিন খুঁজাখুঁজি করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না তাদের। গত কয়েকমাস ধরে ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুর, পশ্চিম ইলিশা ও পূর্ব ইলিশার শতাধিক গরু ও ছাগল চুরি হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তারাই ধারাবাহিকতায় এলাকায় গরু চুরির ঘটনার খবর পেয়ে পূর্ব ইলিশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান চোর শনাক্ত করতে চারদিকে সোর্স লাগিয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এক ইউপি সদস্য জানান পূর্ব ইলিশার কসাইদের পরিষদে ডেকে এনে সর্তক করেছে চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন ছোটন। এতো কিছু করার পরেও চুরি না কমায় অবশেষে ১৯শে ফেব্রুয়ারী ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ইলিশা ইউনিয়ন পরিষদের কয়েকজন ইউপি সদস্য ও গ্রাম পুলিশরা গুপ্তমুন্সী ৮নং ওয়ার্ডের আবদুল মান্নানের বাসায় গিয়ে প্রাথমিক ভাবে এর সত্যতা পেয়েছেন।
এদিকে ইউপি সদস্য লিটন চুরি হয়ে যাওয়া গরু স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন ছোটনকে জানালে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে ৫টি গরু, এবং অর্ধশতাধিক গরু বাঁধার দড়ি, ফ্রিজে মাংস, ১০টির মত পা উদ্ধার করেন এছাড়া আবদুল মান্নান বেপারীর বাড়ীর চারপাশে জবাই করে ভুঁড়ি চামড়াসহ গরু ছাগলের বিভিন্ন অংশ মাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। বিভিন্ন সময় চুরি হয়ে যাওয়া গরুর আলামত চোর মান্নানের বাড়িতে পাওয়ার সাথে সাথে ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যান বাড়ীতে যাওয়ার আগেই পালিয়ে যান।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানাযায়, আবদুল মান্নান ও তার তিন ছেলে এবং মেয়ের জামাই মাইনউদ্দিনের কাছে চোরেরা বিভিন্ন গরু, ছাগল চুরি করে এনে জমা রাখলে মান্নান ও তার জামাই ছেলেরা চুক্তিভিত্তিক কসাইদের কাছে বিক্রি করেন। গরীব কৃষকদের পেটে লাথি দিয়ে চোরদের গডফাদার মান্নান ও তার ছেলেরা ক্ষুদ্র মাছ ব্যবসাকে সাইনবোর্ড হিসেবে ব্যবহার করে ভোলা লক্ষ্মীপুর সড়কের পাশে তিনতলা আলিশান মান্নান মার্কেট গড়ে তুলেছেন বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। হঠাৎ আলাদীনের চেরাগের মত বনে যান মান্নান। আবদুল মান্নানের এক প্রতিবেশী বলেন, ভোলা শহরের কিচেন মার্কেটে মাছ কিনে বিক্রি করেন মান্নান, তার ছেলেদের ও একই পেশা তাহলে নুন আনতে পান্তা পুড়ানো মান্নান আজ আলিশান মার্কেট ও বাড়ী মালিক। কোথায় পেলো এত টাকা? আমরা প্রতিবেশীরা এতদিন যে সন্দেহ্ করেছি আজ সেটাই সত্য হলো তবে শুধু মান্নান নয় এই ঘটনার সাথে অনেকেই জড়িত বলে জানান মান্নানের ওই প্রতিবেশী।
এই ঘটনায় অভিযুক্ত আবদুল মান্নানের ছেলে বিল্লাল হোসেন বলেন, এই ঘটনায় আমরা জড়িত না তবে মাইনউদ্দিন নামের একজনে মাঝেমধ্যে গরু এনে রাখতো এবং জবাই করে নিয়ে যেতো।
গরু চুরি হয়ে যাওয়া চোর সম্পর্কে জানতে চাইলে ইলিশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন ছোটন বলেন, আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্যতা পেয়েছি, গরুসহ গরুর পা, গোশত ও গরু জবাইয়ের বিভিন্ন সামগ্রী উদ্ধার করেছি। যাদের গরু চুরি হয়েছে তারাও অনেকে এসেছে। প্রাথমিক ভাবে নিশ্চিত হয়েছি আবদুল মান্নানই গরু চুরির গডফাদার।
তবে এর সাথে আরো কে বা কারা জরিত অধিকতর তদন্ত চলছে, পুলিশ কে জানিয়েছি আইনি ভাবে বিষয়টি দেখা হবে বলে জানিযেছেন।
ইলিশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ গোলাম মোস্তফা জানান, আমরা ৫টি গরু ও একজন মহিলাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।