• সারাদেশ

    সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে ৫০টি গ্রামের ৩ লক্ষাধিক মানুষের মাঝে চলছে উৎসবের প্রস্তুতি

      প্রতিনিধি ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ৮:২১:০০ প্রিন্ট সংস্করণ

     

    সেলিম রেজা সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

     

    উপমহাদেশের অন্যতম ইসলাম প্রচারক, সিরাজগঞ্জের শাহ্‌ সূফি খাজা বাবা ইউনূস আলী এনায়েতপুরী (রঃ) এর ১০৮তম বাৎসরিক ওরশ শরীফ উপলক্ষে এনায়েতপুরে ৫০টি গ্রামের ৩ লক্ষাধিক মানুষের মাঝে চলছে উৎসবের প্রস্তুতি। ধর্মীয় এ মহাসমাবেশ উপলক্ষ করে এ থানার প্রতিটি বাড়িতে নায়রে ঝি-বেটি, দুলাভাই তথা আত্মীয়-স্বজনদের এনে হবে শীতের পিঠা-পুলির নবান্ন উৎসব। এ ওরশের ১০৮তম ঐতিহ্যের মেলাকে ঘিরেও আগ্রহ যমুনা পাড়ের টাঙ্গাইল, পাবনা, মানিকগঞ্জ ও সিরাজগঞ্জ জেলাবাসীর। ঈদের পরেই এলাকায় স্থান পাওয়া আগামী পহেলা মার্চ থেকে শুরু হতে চলা সপ্তাহব্যাপী এ উৎসবের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে চলছে তাই সবার মাঝেই উৎসাহ-উদ্দীপনা। জানা যায়, খাজা ইউনূস আলী এনায়েতপুরী (রঃ) মুলত রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর বংশধর। ইসলামের শান্তির বাণী প্রচারের জন্য ইয়েমেন থেকে তাদের বাংলায় আগমন হয়। ১৯১৬ সালে এনায়েতপুর দরবার শরীফে তার কয়েকজন ভক্তের পরামর্শে স্বল্প পরিসরে কয়েকশ’ অনুসারী নিয়ে ধর্মীয় জিকির-আজগার,আলোচনা, হাম্‌দ-নাত, গজল পরিবেশনের মধ্য দিয়ে ইসলামের আদর্শে জীবন পরিচালনার আহ্বানের ওরশ মোবারক শুরু হয়। তার মানবিক কল্যাণকর কাজ সবার মাঝে দৃষ্টি কাড়লে দেশের সর্বত্র ও ভারতের আসামে সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। এরপর হতে সম্মিলিত উদ্যোগ, সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় প্রতি বছরই তার দেশ-বিদেশের অনুসারী লাখ-লাখ জাকের নারী-পুরুষ ভক্তদের অংশগ্রহণ এনায়েতপুর পাক দরবার শরীফে বাৎসরিক ওরশের মাধ্যমে দেশের বৃহৎ ধর্মীয় মহাসমাবেশ হয়ে আসছে,। এবছরও ১লা মার্চ ১৬ই ফাল্গুন হতে ১০৮তম এই বাৎসরিক ৩ দিনব্যাপী ওরশ ও মেলা নিয়ে জেলাবাসীর রয়েছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা।,এ উৎসবের মাত্রাকে আরও সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে খাজা ইউনূছ আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কের সয়দাবাদ মোড়, বেলকুচির চালা, এনায়েতপুর কেজি’র মোড়, মণ্ডলপাড়া মোড়, খাজা ইউনূছ আলী কলেজ ও হাসপাতাল গেটে সুবিশাল দৃষ্টিনন্দন তোরণ স্থাপনের পাশাপাশি এনায়েতপুর-সিরাজগঞ্জ সড়কের এনায়েতপুর ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় হতে হাসপাতাল হয়ে মাজার ও এনায়েতপুর পুরাতন বাজার হয়ে কেজি’র মোড় পর্যন্ত সড়ক এবং এনায়েতপুর স্পার বাঁধ রাস্তার ওপরে বাঁশ টাঙিয়ে পুরো এলাকায় লাল-সবুজ, নীল, সাদা, সোনালী সহ নানা রঙবেরঙের বাহারী আলোকসজ্জার কাজ চলছে। এদিকে এই ওরশ উপলক্ষে এনায়েতপুর থানার ৫টি ইউনিয়নের অন্তত ৫০টি গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে চলছে এখন উৎসবের প্রস্তুতি। ইতিমধ্যেই সকল আত্মীয়-স্বজনদের নায়রে আনতে দাওয়াত করা হয়েছে। কেউ ওরশ শরীফের আগের দিন কেউবা আবার শুরুর দিন এলাকার স্বজনদের বাড়িতে আসবেন। মূলত এসব দাওয়াত প্রাপ্তরা সাধারণত অন্য থানা ও জেলার হয়ে থাকে। ওরশ শরীফে মাজার জিয়ারত, ধর্মীয় নানা আনুষ্ঠানিকতায় অংশ নেয়া সহ ঐতিহ্যের বিশাল মেলায় দলবলে কেনা-কাটা করে থাকেন। পাশাপাশি তাদের আতিথিয়তায় টানা কয়েকদিন বাড়িতে থাকে খেজুরের রসের গুড়ের পিঠা-পুলি, পায়েশ সহ বাহারী খাবারের আয়োজন।, এছাড়া দরবারের সুস্বাদু তবারকের স্বাদ নেয়াও এই উৎসবের অন্যতম প্রধান অনুসজ্ঞ। ওরশ শরীফের এই আয়োজন বহুকাল ধরে দৃঢ় করে রাখছে মুসলিম-হিন্দু সকল মানুষের অনন্য সমপ্রীতির বন্ধন। এ ব্যাপারে এনায়েতপুর গ্রামের প্রবীণ সমাজসেবক আহম্মদ মোস্তফা খান বাচ্চু, সোলেমান হোসেন মাস্টার ও খোকশাবাড়ী গ্রামের কালীপদ সরকার জানান, শত বছরের আমাদের প্রাচীন উৎসব হচ্ছে ওরশ শরীফ। যে যার যার মতো পারি আমরা ওরশ শরীফ সফল করতে কাজ করি। পাশাপাশি এ ধর্মীয় মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে আদিকাল থেকেই আমাদের বাড়িতে দূর-দূরান্তের আত্মীয়-স্বজনদের নিমন্ত্রণ করে থাকি। তারা দরবার শরীফে আশা ১০/১২ লাখ মানুষের সৌহার্দ্য আলিঙ্গন করেন। পাশাপাশি নানা পসরার গ্রামীণ মেলায় কেনাকাটা করে উৎসবে মাতেন। এজন্য দরবারে যেমন তাদের গরু-খাসি, মাছ, ডাল-সবজির অমৃত তবারক খাইয়ে আপ্যায়িত করা হয়। তেমনি বাড়িতেও থাকে পিঠা-পুলির আয়োজন। এ এক অন্যরকম আত্মিক উৎসব। মাসখানেক আগে থেকেই ধনী-গরিব প্রতিটি মানুষ তাই প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন। এদিকে এনায়েতপুর পাক দরবার শরীফ কর্তৃপক্ষের আলহাজ হামিদুল হক, পেশ ইমাম আলহাজ মাওলানা আব্দুল আওয়াল ও মোজাদ্দেদীয়া আনসার কমান্ডার আনিসুর রহমান জানান, খাজা পীর এনায়েতপুরী (রঃ), ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে অহিংসাপরায়ণ শান্তির বিশ্ব দেখতে সত্যিকারের ইসলামের আদর্শ বাস্তবায়নে কাজ করে গেছেন। তিনি ইসলামের আদর্শে মানবতার দর্শন নিয়ে সকলকে জীবন গড়ার পথ দেখিয়েছেন। তাই তার ওরশ শরীফকে মহা পবিত্র উৎসব আয়োজন মনে করি আমরা। প্রতিবার এই মহাসমাবেশে অংশ নিয়ে আমরা নতুন আলোর পথ খুঁজে পাই।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ

    রূপগঞ্জে এসএসসি, দাখিল ও ভোকেশনাল পরীক্ষা শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে চলছে

    লালপুরে ভাতিজার হাসুয়ার আঘাতে চাচা প্রাণ যায় যায়, আসামি মাসুদ আটক

    ভোলার সন্তান ইঞ্জি: সাইদুর রহমান সাব্বির বিটিপিপি এর সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত

    ভাড়ায় চলছে লালপুরের সরকারি ডাকঘর 

    আমিনপুর থানা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে রেজাউল হক বাবু’র জন্মদিন উদযাপন

    ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত ছেলেকে বাঁচাতে মা-বাবার আকুতিপ্রেস রিলিজঃ সাথিয়ার আলোচিত রাজা হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন। গত ইং ১৭/০৭/২০২২ তারিখ সন্ধ্যা অনুমান ০৭ ঘটিকার সময় ভিকটিম রাজা প্রাং (৫০), পিতা-মৃত সিরাজ প্রাং,সাং-শ্রীধরকুড়া, থানা-সাঁথিয়া, জেলা-পাবনা তার পূর্ব পরিচিত মোঃ অনিক হোসেন (১৮) ও হৃদয় হোসেনর (১৯) সাথে প্রতিবেশি জয়নালের (২৫) সিএনজি করে পিকনিক খাওয়ার কথা বলে বরাট, কাশিনাথপুরের দিকে যায়। যথাসময়ে ভিকটিম রাজা প্রাং বাড়ীতে না ফেরায় রাজার স্ত্রী মোছাঃ রাশিদা রাজার মোবাইল নাম্বারে ফোন দিলে সিএনজি চালক জয়নাল ফোনটি রিসিভ করে বলে যে, তার কাছে ভিকটিম রাজা মোবাইল ফোনটি রেখে কোথায় যেন চলে গেছে। ঐ দিন রাত্রিতে ভিকটিম রাজা প্রাং বাড়ীতে ফেরত না আসলে পরিবারের লোকজন রাজা প্রাং-কে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করিতে থাকে। খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে গত ইং ২০/০৭/২০২২ তারিখ সকাল অনুমান সকাল ০৯.০০ ঘটিকার সময় সাঁথিয়া থানাধীন সোনাকুড়া বরাট গ্রামের সরকারী ক্যানেলের কচুরি পানার মধ্যে ভিকটিম রাজার অর্ধগলিত লাশ পাওয়া যায়। বিষয়টি হত্যাকান্ড হিসেবে প্রাথমিক ভাবে ধারণা হওয়ায় ভিকটিম রাজার স্ত্রী মোছাঃ রাশিদা বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন যার মামলা নং-২২, তাং-২১/০৭/২০২২ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে তৎকালীন পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান বিপিএম স্যারের নির্দেশনায় ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে ১। সিএনজি চালক জয়নাল (২৫) ২। মোঃ হৃদয় হোসেন (২০) এবং ৩। পিয়াস সরকার (২৩) দের গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক আসামী গণ এই হত্যাকান্ড সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করলে তাদের অত্র মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়। পরবর্তীতে পাবনা জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আকবর আলী মুনসী স্যারের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে জনাব মোঃ মাসুদ আলম,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ), জনাব কল্লোল কুমার দত্ত, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, (বেড়া সার্কেল), জনাব আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম, অফিসার ইনচার্জ এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই ইমতিয়াজ এর নেতৃত্বে একটি চৌকস টিম ঢাকা,গাজীপুর ও সিরাজগঞ্জ এর শাহজাদপুর থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে ১। মোঃ মামুন খান (২৩), পিতা-মোঃ দুলাল খান এবং ২। মোঃ আশিক ফকির (২৫), পিতা-মোঃ আনিছ ফকির , উভয় সাং-সোনাকুড়া বরাট,থানা-সাঁথিয়া, জেলা-পাবনাদ্বয়কে গ্রেফতার পূর্বক বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ মামুন খান (২৩) বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। আসামী মোঃ মামুন খান (২৩) এর প্রদত্ত জবানবন্দিতে জানা যায় যে, ভিকটিম রাজা প্রাং মাদকের সাথে সম্পৃক্ত ছিল। মাদক খাওয়ার টাকা পয়সাকে কেন্দ্র করে আসামী হৃদয় এবং অনিকের সাথে ঝামেলা ছিল। অপর আসামী মামুন এবং জুয়েলের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে সাথিয়া থানায় মাদকদ্রব্য আইনে একটা মামলা হয়। এই মামলার সোর্স হিসেবে ভিকটিম রাজা ছিল বলে আসামীদের ধারণা। আর এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী রনির সাথে খাসের পুকুর ও জমির দখল নিয়ে বিরোধ ছিল। উক্ত বিরোধ ও পূর্বশত্রুতার জের ধরে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে কৌশলে ভিকটিম রাজা প্রাং-কে মোঃ জয়নাল এর সিএনজি যোগে মোঃ হৃদয় ও মোঃ অনিক কে দিয়ে ডেকে নিয়ে আসার পর মাদকদ্রব্য গঁাজা খাওয়ার কথা বলে সোনাকুড়া বরাট গ্রামের সরকারী ক্যানেলের ধারে পাটক্ষেতে নিয়ে যায় এবং রাত্রি অনুমান ১০.০০ ঘটিকা হতে ১১.০০ ঘটিকার মধ্যে আসামী মোঃ রনির নেতৃত্বে মোঃ হৃদয়, মোঃ জয়নাল, মোঃ অনিক, মোঃ জুয়েল, মোঃ মামুন, মোঃ আশিক, এনামুল হক ও মোঃ সোহেলগন মিলে ভিকটিম রাজাকে গলাটিপে হত্যা করে মৃতদেহ পার্শ্ববর্তী ক্যানেল-এ কচুরিপানার মধ্যে লুকিয়ে রাখে। আসামী মোঃ জয়নাল এর নিকট হতে ভিকটিম রাজা প্রাং এর ব্যাবহৃত মোবাইল ফোন ও সিএনজি গাড়ী উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা আছে