প্রতিনিধি ২৩ মার্চ ২০২৩ , ৮:৪৪:০৪ প্রিন্ট সংস্করণ
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাত্রিতে গণহত্যার শিকার শহিদদের স্মরণে এবং গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি কর্তৃক আয়োজিত ‘১৯৭১-এর গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিঃ গবেষণা প্রকাশনা ও কূটনৈতিক তৎপরতার তাৎপর্য শীর্ষক সেমিনার’ এ উপস্থিত হয়ে তিনি এ কথা বলেন। আজ ২৩ মার্চ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয় সকাল ১০ টায়।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. লুৎফর রহমান বলেন, একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য আমাদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে, আমাদেরকে দায়িত্ব নিতে হবে। গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য গবেষণা প্রকাশনা ও কূটনৈতিক তৎপরতার বিকল্প নেই।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক বলেন, একাত্তরের গণহত্যার বিচার করবেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কিন্তু পাক হানাদারদের দোসররা তাকেই হত্যা করলো এবং অধ্যাদেশ জারিত করা হলো সেই ঘৃণিত হত্যাকাণ্ডের বিচার করা যাবে না; যা আমাদের জাতির জন্য চরম কলঙ্কময় অধ্যায়। তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে একত্র হয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তিকে প্রতিহত করতে হবে। সেটাই হবে আমাদের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের প্রথম ধাপ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিচাপতি এম. এনায়েতুর রহিম বলেন, পঁচাত্তরে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে আমরা বাংলাকে হারিয়ে ফেলি, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর মাধ্যমে আমরা বঙ্গবন্ধুর সেই বাংলা কে নতুন করে পেতে শুরু করেছি। কারাগারের রোজনামচা ও অসমাপ্ত আত্মজীবনীর মাধ্যমে আমরা আমাদের সংগ্রামের ইতিহাস জানতে পেরেছি। তিনি আরও বলেন, জয় বাংলা স্লোগানের মাধ্যমে তিনি সমগ্র বাঙালি জাতিকে একত্র করেছিলেন। “তুমি কে? আমি কে? বাঙালি, বাঙালি” স্লোগানের মাধ্যমে তিনি আমাদের উপলব্ধি করিয়েছিলেন আমাদের একত্র হতে হবে। পঁচাত্তরের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর সংবিধান কাটাছেঁড়া করে ঐতিহাসিক স্বাধীনতা সংগ্রামের পরিবর্তে যুদ্ধ যোগ করে তারা বাংলার ইতিহাস পরিবর্তন করতে চেয়েছে। কিন্তু তারা সফল হয় নি। তারা কঁপালের টিপ, বাংলা ভাষাকে হিন্দু সংস্কৃতি হিসেবে গুজব রটিয়ে আমাদেরকে সাম্প্রদায়িক করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু দেশকে স্বাধীন করে অসাম্প্রদায়িক বাংলা গড়েছেন। তিনি বলেন, পাক বাহিনী মানুষকে বাস্তুহারা করেছে, শরণার্থী করেছে। মানুষকে বাস্তুহারা করা বড় জেনোসাইড, মানুষকে শরণার্থী করা বড় জেনোসাইড।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ আইনুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নীলদলের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. নাফিস আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোঃ আবুল হোসেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ, আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এস. এম. মাসুম বিল্লাহ ও অধ্যাপক ড. মোঃ জাকারিয়া মিয়া।