প্রতিনিধি ৬ এপ্রিল ২০২৩ , ৯:২৫:৪১ প্রিন্ট সংস্করণ
এ জেড সুজন মাহমুদ,লালপুরে (নাটোর) প্রতিনিধি:
নাটোরের লালপুর উপজেলার সালামপুর দাখিল মাদ্রাসায় জাল/ভূয়া কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সনদ দিয়ে ২০ বছর ধরে চাকুরী করছেন সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) পদে এমপিও ভূক্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে সানোয়ার নামের এক শিক্ষকের নামে।
এ বিষয়ে সালামপুর দাখিল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি অত্র প্রতিষ্ঠানে সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পরে মাদ্রাসাটির সার্বিক বিষয়ে উন্নতির জন্য একটি সাধারণ সভার আহবান করি এবং ঐ সভায় ছাত্র/ছাত্রীদের পাঠদানের বিষয়ে খোঁজ নিলে জানতে পারি, বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে এই মাদ্রাসায় কোন প্রকার কম্পিউটার শিক্ষা দেওয়া হয় না, কিন্তু অত্র মাদ্রাসায় সরকার প্রদত্ত ২ টি কম্পিউটার,১ টি ল্যাপটপ-প্রজেক্টর ও প্রতিষ্ঠানের কেনা একটি প্রিন্টার ব্যাবহার না করার ফলে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। বিষয়টি নিয়ে কম্পিউটার শিক্ষক সানোয়ার হোসেনকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি কোন সদউত্তর না দিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যায়। পরে বিষয়টা নিয়ে অত্র প্রতিষ্ঠানের সুপার সাহেবকে অবগত করলে তিনি বলেন, কম্পিউটার শিক্ষক সানোয়ার ছাত্র/ছাত্রীদের হাতে কলমে কোন শিক্ষা দেন না। সেই সাথে মাদ্রাসার যাবতীয়(ফরম পূরন,রেজিষ্ট্রেশন,উপবৃত্তি,বেতন বিলের আবেদন,বেতন বিল) কম্পিউটারের কাজ বাহিরের কম্পিউটার থেকে করা হয়।
সভাপতি সাইফুল ইসলাম আরো বলেন, এগুলো জানার পরে কম্পিউটার শিক্ষক সানোয়ারের কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সনদের উপর আমার সন্দেহ হলে আমি তার কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সনদ যাচাই-বাছাই করার জন্য নাটোর জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখত আবেদন সহ বিভিন্ন দপ্তরে এর অনুলিপি পাঠায়ছিলাম।
পরে গত ৫/০১/২৩ ইং তারিখে জাতীয় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমি(নেক্সটার)বগুড়া থেকে তার কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সনদ জাল/ভূয়া বলে প্রমাণিত হয়েছে। খুব শীঘ্রই অত্র প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী, অভিভাবক সদস্য ও স্থানীয় গন্যমান্য সূধীজনদের সমন্বয়ে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে অত্র মাদ্রাসার সুপার মোঃ মহির উদ্দিন বলেন, কম্পিউটার শিক্ষক হিসেবে সানোয়ার নিয়োগ পেয়েছেন ২০০৩ সালে, এমপিও ভূক্ত হওয়ার সময় ২০০৪ সালে বগুড়া নট্টার্মস কলেজের কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সনদ দিলে সেই সনদের জটিলতা থাকার কারনে এমপিও ভূক্ত হয় না। পরে ঢাকা ফার্ম গেট থেকে একটি সনদ সংগ্রহ করে নিয়ম বহিঃভূত ভাবে এমপিও ভূক্ত হয়। সেই সনদের মূলকপি/ছায়া কপি আজ পর্যন্ত আমাকে দেখাতে পারে নাই। এমনকি মাদ্রাসা অডিটের সময় ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের নিকট সদুত্তর দিতে পারে নাই। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নোটিশ আসে সকল প্রতিষ্ঠান জাল/ভুয়া সার্টিফিকেট সনদের বিষয়ে আসলে। সেই সময় আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে আবেদন করলে সকল শিক্ষকদের সার্টিফিকেটের মধ্যে সানোয়ার হোসেনের সার্টিফিকেট যাচাই-বাছাই করে সার্টিফিকেট জাল/ভুয়া বলে গণ্য হয়েছে। বিগত ২০ বছর তথ্য প্রযুক্তির এমন ব্যবস্থা না থাকায় এই শিক্ষক এতদিন যাবত ভুয়া সার্টিফিকেট দিয়ে চাকরি করে আসছে আমি অত্র প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সকল সদস্য , শিক্ষকমন্ডলী এবং সকল স্টাফদেরকে নিয়ে কিছুদিনের মধ্যে আরেকটি মিটিং কল করে এই বিষয়ে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে ভূক্তভোগী কম্পিউটার শিক্ষক সানোয়ার হোসেন বলেন আমাকে অফিস থেকে এখনো কোনো কিছু জানাইনি আর এই বিষয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে পারবো না কে বা কাহারা আমার বিষয়ে অভিযোগ করেছে সেটাও জানি না।