প্রতিনিধি ২৯ মে ২০২৩ , ৭:৪১:৫৫ প্রিন্ট সংস্করণ
আহসান বরিশাল ব্যুরো :
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার দুলার এলাকার আবুবকর পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজ জমদার এর নির্দেশে ধর্ষিতা কে মারধরের অভিযোগ উঠেছে,বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
আজ ২৯মে সোমবার ঘটনা জানাজানি হলে সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গেলে স্থানীয় বাসিন্দা কালাম (৪০),রফিকুল (৩৮),নুরুন্নাহার(৩৫) বলেন, চরফ্যাশন উপজেলার দুলার হাট এলাকার আবুবকরপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের স্বামী পরিত্যাক্তা রোকেয়া দুই সন্তান নিয়ে বাবার বাড়ীতেই থাকতেন,বাসা বাড়ীতে কাজ করে,মানুষের কাছ থেকে জমি বর্গা নিয়ে কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এসুযোগে এ সুযোগে সালাউদ্দিন বেপারী রোকেয়া কে বিভিন্ন ধরনের কু-প্রস্তাব দিয়ে আসতেছে। আমাদের (এলাকাবাসী) কে জানালে আমরা তার পরিবারে সদস্যদেরকে জানানোর পরামর্শ দিলে রোকেয়া সালাউদ্দিন বেপারীর পরিবারের সদস্য দেরকে অবহিত করলে তার কথার কোন গুরুত্ব দেয় না। তারই ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার ভোরের দিকে ডাকচিৎকার শুনে এসে দেখি সালাউদ্দিন বেপারীর ভাই, বাবা, ও তার স্ত্রী এলোপাথারীভাবে পিটিয়ে লাথি মেরে এবং চুলের মুটি ধরে টেনে হিচরে নিয়ে মারধর করে তাকে সালাউদ্দিন বেপারী কে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে রোকেয়ার কাছে জানতে পারি তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে সালাউদ্দিন বেপারী।
স্থানীয়রা আরো বলেন, রোকেয়া বিষয়টি নিয়ে আবুবকরপুর ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজ জমদার কে ধর্ষণ বিষয় অবহিত করলে চেয়ারম্যান বিষয়টি তেমন কোন গুরুত্ব না দিয়ে। উল্টো চৌকিদার এবং সালাউদ্দিন বেপারীর লোকজন কে নির্দেশ দেন তাকে মারধর করতে,যাহার কারনে চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে ও তার নির্দেশে স্থানীয় রৌদ্দেরহাট বাজারে পূনরায় রোকেয়া কে এলোপাথারীভাবে মারধর করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। সেখানে অনেক লোকজন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বলে দাবি তাদের। পরে রোকেয়া দুলার হাট থানায় গিয়ে সালাউদ্দিন বেপারী সহ চার জন কে আসামি করে একটি মামলা করে।
ভিকটিম রোকেয়া বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন আমার বাবা মা কেউ বেচে নেই,দুই সন্তান নিয়ে অসহায় মানবেতর জিবনযাপন করছি, এমতাবস্থায় সালাউদ্দিন বেপারি আমার ইজ্জৎ নষ্ট করেছে, তার বিচার চাইতে আমি চেয়ারম্যানের কাছে গিয়েছি,চেয়ারম্যান বিচার না করে, উল্টো আমাকে অপবাদ দিয়ে চৌকিদার ও সালাউদ্দিন বেপারীর লোকজন কে দিয়ে আমাকে বেধম প্রহার করে, স্থানীয় রৌদ্দের হাট বাজারের শত শত লোক সেটা দেখেছে,আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
এদিকে অভিযুক্ত সালাউদ্দিন বেপারী সাথে কথা বলতে তাকে না পেয়ে তার বাড়ীতে গেলে তার বাসায় কাউকে পাওয়া যায়নি, তার স্ত্রীর সাথে কথা বলে তিনি রোকেয়া কে দোষারোপ করে বলেন এই সমস্ত কিছু মিথ্যা বানোট ও ষড়যন্ত্রমূলক, শুনেছি থানায় মামলা করেছে রোকেয়া তাই তারা কেউ বাড়ীতে নেই।
উক্ত আবুবকরপুর ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজ জমদার কে মুঠোফোনে ধর্ষণের বিষয়ে বিচার চাইতে গিয়ে তার উপস্থিতি ও নির্দেশে উল্টো মারধরের শিকার হওয়ার বিষয় প্রশ্ন করা হলে, তিনি এবিষয় কথা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করে বলেন আমি এখন ঢাকায় আছি, আমি ডাঃ কাছে যাচ্ছি বলে ফোন কেটে দেন।
এ বিষয় চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা
(ইউ এন ও) আল-নোমান কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন প্রথমে ভিকটিম মহিলার সেখানে যাওয়া উচিৎ হয়নি, তিনি আর বলেন চেয়ারম্যানরা গ্রাম আদালতের প্রধান হিসেবে স্থানীয় বিবাদ মিমাংশ করতে পারেন,কিন্তু ধর্ষণ নিয়ে তিনি কিছু করতে পারেনা, অভিযোগ পেলে দুলার হাট থানার ওসি’র মাধ্যমে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) তামিম আল ইয়ামিন, এ প্রতিবেদক কে বলেন, চেয়ারম্যানদের এবিষয় কোনো এখতিয়ার নেই অভিযোগ পেলে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে এক অনুসন্ধানে জানা গেছে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ, ভূমি দখল, স্বজনপ্রীতি, নাড়ী কেলেঙ্কারি ও অশালীন আচরণ সহ বিস্তর অভিযোগ ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার দুলার হাট থানাধীন আবুবকরপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সিরাজ জমদারের বিরুদ্বে।
চেয়ারম্যান হওয়ার সুবাদে ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি দুর্নীতির মাধ্যমে বানিয়েছেন অঢেল সম্পদ। হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। চেয়ারম্যান সিরাজ জমাদারের এই জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পেতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি কামনা করছেন আবুবকরপুর ইউনিয়নবাসী।
দুলার হাট থানা সুত্র বলছে, চেয়ারম্যান সিরাজ জমদার কে বারবার নিষেধ করা হয়েছে এ সমস্ত কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য, কিন্তু তিনি তা শুনছেন না।