বেড়ায় শিয়ালের আক্রমণে ৬ জন আহত

ফেরদৌস তপন বিশেষ প্রতিনিধি:

পাবনার বেড়া উপজেলার পুরান ভারেঙ্গা ইউনিয়নের বক্তারপুর ও বোড়া মারা গ্রামে সংঘবদ্ধ শিয়ালের আক্রমণে অন্তত ৬ জন গ্রামবাসী আহত হয়েছেন। গ্রামবাসী পরে প্রতিরোধ গড়ে তুলে একটি শিয়ালকে মেরেছে। আতংকিত গ্রামবাসী লাঠিসোটা নিয়ে গ্রাম পাহারা দিচ্ছেন।

গত মঙ্গলবার দুপুরে হঠাৎ করেই প্রায় ১৫-২০টি শিয়াল দল বেঁধে গ্রামবাসীর ওপর হামলা করে। বুধবার বিকেল পর্যন্ত থেমে থেমে হামলা চালিয়েছে শিয়াল।

কামরের সময় ১টি শিয়ালকে জরিয়ে ধরে চিৎকার করলে গ্রামবাসি এসে তাকে আহত অবস্থা উদ্ধার করে শিয়ালটিকে মেরে ফেলতে সমর্থ হয়। এলাকায় ভীতিকর অবস্থা বিরাজ করছে শিয়ালের ভয়ে শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে পারছে না। শিয়ালে কামড়ানো সবাই বেড়া স্বাস্থ্য কেন্দ্রে জলাতঙ্কের চিকিৎসা নিচ্ছেন।

স্থানীয় মেম্বর আবুল কালাম মন্ডলে সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন আমরা জনগনকে সতর্ক করছি এবং পাহারার ব্যাবস্থা করছি।এবং যাদের শিয়ালে কামরিয়েছে তাদের চিকিৎসার সহযোগিতা করছি।

শিয়াল আতংকে লাঠি নিয়ে গ্রামবাসীদের পাহারা দিতে দেখা গেছে বুদবার বিকালেও। শিশু-কিশোররা স্কুলে না গিয়ে বড়দের সঙ্গে লাঠি নিয়ে গ্রামে ঘুরছে।

সেখানে রওহা এবং রমিম নামে দুই ভাইকে দেখা যায় যারা কাঁধে ব্যাগ ও হাতে লাঠি নিয়ে স্কুলে যাচ্ছে। রওহা তৃতীয় শ্রেণিতে ও রমিম শিশু শ্রেণিতে পড়ে। তাদের দুইজনের হাতেই ছিল বাঁশের কঞ্চি।

শিয়ালের কামড়ে আহত বক্তারপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম জানান, বুধবার দুপুরে তিনি বাড়িতে কাজ করছিলেন। এ সময় হঠাৎ করে বাড়িতে একটি শিয়াল ঢুকে তাকে কামড়ানো শুরু করে। তার হাতে ও পায়ে কামড় দিয়ে পালিয়ে গেছে শিয়ালটি। পুরো শরীরে ব্যথা অনুভূত হওয়ায় তিনি কোনো কাজ করতে পারছেন না এখন।

শিয়ালের কামড় খেয়েছেন ওই গ্রামের ৬ বছরের এক শিশু। তার মা , সন্ধ্যায় তিনি বাড়িতে রান্না করছিলেন। হঠাৎ করেন তার ঘরে শিয়াল ঢুকে পড়ে তাকে কামড়ে ধরে নিয়ে যাবার সময় তার মায়ের চিৎকারে এলাকাবাসি আসলে তাকে ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে চলে যায়।

গ্রামের বাসিন্দা মো. জহাঙ্গীর মোল্লা বলেন (৪৫) জানান, গ্রামের অনেকেই জঙ্গল কেটে বাড়ি তৈরি করছেন। একারণে শিয়ালগুলো ক্ষিপ্ত হয়ে হামলা চালিয়ে থাকতে পারে। গ্রামের বাসিন্দারা খুব আতংকে রয়েছেন। ছেলেমেয়েরা ভয়ে স্কুলে যাচ্ছে না। শিয়ালগুলো বুধবার বিকেল পর্যন্ত থেমে থেমে গ্রামে আক্রমণ করেছে। আট-দশটি গরু, ছাগলকেও কামড় দিয়েছে।

গ্রামবাসীরা বলেছে, শিয়াল আতঙ্কে ভুগছে সবাই। শিয়ালের অত্যাচার থেকে বাঁচার জন্যে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।