• আরো

    হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে ভাতিজীকে নিয়ে পালালো পরাজিত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী চাচা!মেয়ে নিখোঁজের জিডি করলেন বাবা এলাকা তোলপার

      প্রতিনিধি ১৫ আগস্ট ২০২৩ , ১০:৪৬:৪৯ প্রিন্ট সংস্করণ

     

    হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে ভাতিজীকে নিয়ে পালালো পরাজিত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী এক চাচা।এই ঘটনায় এলাকা তোলপাড়।এছাড়াও লোক মুখে শোনা যাচ্ছে এই ঘটনা নিয়ে নানান গুঞ্জন।অন্যদিকে মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় থানায় জিডি করলেন মেয়ের বাবা।

    এই ঘটনাটি ঘটেছে বানিয়াচং উপজেলার ৫নং দৌলতপুর ইউনিয়নে।  এলাকাবাসি, জনপ্রতিনিধি ও জিডির সূত্রে জানাযায়,গত ১০ আগস্ট এই ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের তেলঘরি গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য দূর্গা চরণ দাসের পুত্র উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মন্টু দাস(৩৫) একই ইউপির ৯নং ওয়ার্ডের করচা গ্রামের ধর্ম ভাই স্হানীয় করচা চকবাজারের মুদিমাল ব্যাবসায়ী গোপাল বৈষ্ণব এর হবিগঞ্জ বৃন্দাবন কলেজ পড়ুয়া কন্যা (ভাতিজী)কে নিয়ে পালিয়ে যায়।

    আর এই ঘটনাটি এলাকাবাসীসহ পুরো গ্রামে জানাজানি হয়ে পড়লে এনিয়ে শুরু হয় নানান আলোচনা সমালোচনা। এমনকি লোকমুখে শুনা যায় ভিন্ন ধরণের নানান গুঞ্জন ও বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য।

    অন্যদিকে মেয়ে নিখোঁজের ২য় দিনে তার বাবাকে ফোন করে জানায়,মন্টু চাচা তাকে বিকালের দিকে ফোন করে স্থানীয় চক বাজার যাওয়ার কথা বলে।সে তার কথায় সায় না দিলে এক প্রকার তাকে বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে নিয়ে যান।

    এবং সেখানে নিয়ে তাকে চেতনানাশক কিছু একটা খাইয়ে অচেতন করে ফেলেন এবং চোখ বেধে তাকে কোথায় নিয়ে যান সে নিজেও জানেনা। এদিকে জ্ঞান ফিরার পর মেয়েটি তার বাবার কাছে ফোনে এমন কথা বলে তাকে উদ্ধার করার জন্য আকুতি জানায়।

    মেয়ের এমন কথা শুনার পর মেয়ের বাবা ও চাচা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে হাজির হয়ে এসব কথা চেয়ারম্যানকে জানান।এসময় চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আরও লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

    এমনকি মন্টু দাস তার মেয়েকে জোরপূর্বক উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি মেয়ে তার বাবার সাথে ফোনে আলাপের সময় রেকর্ডকৃত কথা গুলো ও শুনানো হয় চেয়ারম্যানসহ উপস্থিত লোকজনের সামনে।

    ইউপি চেয়ারম্যান বিষয়টি শুনার সাথে সাথে মেয়ের বাবাকে থানায় যাওয়ার পরামর্শ দেন।এমনকি তিনি নিজে এই বিষয়টি বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জকে ফোন করে অবগত করেন।

    চেয়ারম্যানের কথা অনুযায়ী ১২আগস্ট মেয়ের বাবা বানিয়াচং থানায় এসে গত ১০আগস্ট বিকালে ৫টার দিকে তার মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি অফিসার ইনচার্জকে অবগত করেন।

    এবিষয়টি শুনার পর অফিসার ইনচার্জ ডিউটি অফিসার জাহাঙ্গীর আলম মজুমদারকে এঘটনায় একটি

    জিডি এন্ট্রি করার নির্দেশ দেন।সাথে সাথে এঘটনার বিষয় উল্লেখ করে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়।

    যাহার নং-(৬২৩) তাং-১২/08/২০২৩ ইং।

    জিডি ট্রেকিং নং-SK4D3U)

    এবং এই জিডি এন্ট্রির দায়িত্বভার দেওয়া হয় এসআই স্বপন চন্দ্র সরকারকে।এবং এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্হা গ্রহন করার নির্দেশ প্রদান করা হয়।

    এদিকে অভিযুক্ত মন্টু দাসের বিষয়ে জানতে,তার ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রাজু দাসের সাথে মুঠোফোনে বেলা ১টা ৫৮মিনিটে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,এমন একটি ঘটনা এলাকার লোকমুখে শুনার পর তিনি মন্টুর দাসের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তার কাছ থেকে জানতে পারেন,এই মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি।

    এমনকি এই মেয়েটিকে সে বিয়ে কোর্টের মাধ্যমে বিয়ে করার কথাও শিকার করেছে বলে তার সাথে আলাপকালে জানতে পারেন বলে জানান।

    অন্যদিকে নিখোঁজ হওয়া মেয়ে সম্পর্কে জানতে,৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য দিলিপ চন্দ্র দাসের মুঠুফোনে যোগযোগ করা হলে,ফোনটি তার স্ত্রী রিসিভ করেন।

    এসময় ইউপি সদস্যের সাথে কথা বলেতে চাইলে তিনি জানান,গত দেড় মাস পূর্বে তার স্বামী বুকে ব্যাথা নিয়ে মৃত্যুবরন করেন।

    এব্যাপারে জানতে মেয়ের বাবা গোপাল বৈষ্ণব এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে,তিনি তার মেয়ে নিখোঁজের বিষয়ে থানায় জিডি করার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন,আজ দুই দিন ধরে থানায় যোগাযোগ করে যাচ্ছেন তার মেয়েকে উদ্ধারের জন্য।

    এসময় মন্টু দাস তার কেমন ভাই হন জানতে চাইলে,তিনি এসব এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

    তখন তিন বছর পূর্বে এই মন্টু দাসকে চকবাজারে পেয়ে করচা গ্রামের কৃষ্ণ নামের এক লোক ও তার আত্মীয় মারতে চাইলে এসময় তার দোকানে গিয়ে আশ্রয় নেয় এই মন্টু দাস।এবং তিনি তাকে তাদের হাত থেকে বাঁচিয়ে ছিলেন।

    এবং সেই দিন মন্টু দাস তাকে ধর্ম ভাই হিসাবে আপন করে নেয়।এমনকি তারপর থেকে তাদের বাড়িতেও আসা যাওয়া করতো এই মন্টু দাস।

    এলাকাবাসীর কাছ থেকে এসব তথ্য জানতে পারার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তখন তিনি এসব কিছুর সত্যতা শিকার করেন।তার মেয়েকে মন্টু দাস বিয়ে করে নিয়েছে এমন কথা লোকমুখে শুনা যাচ্ছে,এর সত্যতা কতোটুকু জানতে চাইলে তিনি পড়ে কথা বলবেন বলে ফোনটি কেটে দেন।

    ১২আগষ্ট স্হানীয় চেয়ারম্যান এর কার্যালয়ে উপস্থিতিদের মধ্যে ৫নং দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আজিজুর রহমান এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,মেয়ের বাবা চেয়ারম্যানকে তার মেয়ের ফোনের কথা গুলো বলেন।

    এমনকি তাদের সামনে ফোনের রেকর্ডকৃত কথা গুলো শুনান।মেয়েকে কি খাওয়াইয়া অচেতন করে চোখ বেধে মন্টু দাস নিয়ে যাওয়ার কথা গুলো তিনিও জানান।

    এব্যাপারে জানতে ইউপি চেয়ারম্যান মন্জু কুমার দাস এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসবের সত্যতা শিকার করে বলেন,মেয়েটিকে উদ্ধার করতে যেন থানা পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি মিডিয়া কর্মীগন সহযোগীতা করে মেয়েটিকে উদ্ধার করতে সহযোগীতা করেন।

    এব্যাপারে জিডির কর্মকর্তা এসআই স্বপন চন্দ্র সরকার এর সাথে রাত ১২টা ৫মিনিটে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,জিডি হওয়ার পর এবং তার হাতে দায়িত্ব আসার সাথে সাথেই ১২আগষ্ট তিনি মন্টু দাসের মোবাইল নাম্বার ট্রেকিংয়ের মাধ্যমে হবিগঞ্জ শহরের অভিযান পরিচালনা করেন।

    কিন্তু হঠাৎ মোবাইলের সুইচটি বন্ধ হওয়ার কারনে তাদের স্হানটি শনাক্ত করতে পারেননি।

    তবে তিনি শীঘ্রই মেয়েটিকে উদ্ধারসহ মন্টু দাসকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবেন বলে জানান।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ