প্রতিনিধি ২৭ আগস্ট ২০২৩ , ৬:৫৩:৫৬ প্রিন্ট সংস্করণ
বুলবুল হাসান, স্মৃতি রোমন্থন, ভয়াল ২১ শে আগস্টের পরের দিনে আমার চোখে ঢাকা শহর। সদ্য সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজ থেকে এইচ এস সি পাশ করে এক বুক স্বপ্ন নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরিক্ষা দিতে গিয়েছিলাম স্বপ্নের এ শহরে। ছোট বেলায় শুনতাম ঢাকা শহরের বাহান্ন বাজারের তেপ্পান্ন গলি দেখতে তাই প্রতিদিন দুই বন্ধু মিলে বিকালে পায়ে হেঁটে চলতাম শহরের এ গলি থেকে অন্য গলিতে। ২২ শে আগস্ট এর ব্যাতিক্রম হয়নি যথা নিয়মে হাটতে হাটতে কাকতালীয় ভাবে পৌছে যাই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনাস্থালে। শুনশান নীরবতা চারিদিকে সামনে আগাতেই এক দল পুলিশ আমাদের আটকায়। পুলিশের হাজারো প্রশ্নবানে অনেক টা ভয় পেয়ে যাই। মনে হয়েছিলো হয়তো এ যাত্রায় বেঁচে আর বাড়ি ফেরা হবে না। দীর্ঘ আধা ঘণ্টা জেরায় আমাদের সরল স্বীকার উক্তি ও শরীর তল্লাশি করার পরে বয়স্ক এক পুলিশ কর্মকর্তার কথায় আমাদের ছেড়ে দেন অন্য পুলিশ সদস্য। ভাগ্য সেদিন হয়তো সুপ্রসন্ন হয়েছিল না হলে হয়তো আমাকেও জাতি জানতেন জজ মিয়া বা অন্য কোনো নামে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার চিত্র বলে আসলে বোঝানো মুশকিল। চারিদিকে পরে ছিলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রক্ত মাখা জামা, কাপড়, স্যান্ডেল, চশমা, হাত ঘড়ি। থোপা থোপা রক্তে পিচঢালা রাস্তা মিশে একাকার। রক্ত মাখা দেওয়াল ঘড়িটা তখনো সময় বলে দিয়েছিলো বিকেল পাঁচ টা বাজে। হাজারো স্পীন্টারের আঘাতে ভবনের দেওয়াল গুলো ছিলো ক্ষতবিক্ষত। মানুষ রূপী অমানুষের বিভিষিকাময় কর্মকাণ্ড যেথায় ঝরেছে মানুষের প্রাণ । চারিদিকে পুলিশের পাহারায় লেচ ফিতায় সাধারণ মানুষের প্রবেশ ছিলো নিষেধ। পরে জানতে পাই সেই ২১ আগস্ট গেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত হয়েছিলেন এবং আহত হয়েছিলেন অন্তত ৩০০ জন।
১৯ বছর আগে ২০০৪ সালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ঘটেছিলো এ ভয়াবহ ট্র্যাজেডি।
এখনো শেষ হয়নি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিচারকাজ। স্মৃতি রোমন্থন করতে গেলে আজো বুক কেঁপে ওঠে। ভালো থাকুক বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট। এমনই প্রত্যাশা।